স্বেচ্ছাসেবককে মারধরের অভিযোগ কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে, আধা ঘণ্টা টিকাদান বন্ধ

ময়মনসিংহ মহানগরীর নওমহল এলাকার টিকাকেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবককে মারধরের অভিযোগ ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ আলমের বিরুদ্ধে। এ সময় বুথের কাগজপত্র ছিনিয়ে নিতে দেখা যাচ্ছে তাঁকে
ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে করোনার টিকাকেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার জেরে প্রায় আধা ঘণ্টা টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আজ রোববার সকালে মহানগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডের নওমহল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টিকাকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় টিকা নিতে আসা ব্যক্তিদের লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থেকে দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। স্বেচ্ছাসেবককে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিও ফুটেজে এ সময় এক পুলিশ সদস্যকে বিষয়টি সুরাহা করার চেষ্টা করতে দেখা যায়। এর আগে গত সপ্তাহে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ টিকাকেন্দ্রে নারী স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে ছাত্রলীগ নেতার বাগ্‌বিতণ্ডায় আড়াই ঘণ্টা টিকাদান বন্ধ ছিল। মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি এ কে শাকিল সেদিন এক নারী স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। এ ঘটনায় আটটি বুথে টিকা কার্যক্রম থেকে নিজেদের বিরত রাখেন রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকেরা।

স্বেচ্ছাসেবকদের ভাষ্য, আজ সকাল সাড়ে ১০টায় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ আলম তাঁর শ্যালকসহ বেশ কয়েকজন তরুণ-যুবককে নিয়ে টিকাকেন্দ্রে ঢোকেন। পরে তিনি ২৫ বছরের কমবয়সী তাঁর শ্যালককে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বললে স্বেচ্ছাসেবকেরা অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় কাউন্সিলর টিকাগ্রহীতাদের নামের তালিকাসহ অন্য কাগজপত্র ছিনিয়ে নেন এবং স্বেচ্ছাসেবকদের ধমক দেন। পরে কাউন্সিলর উৎসব সিংহ নামের এক স্বেচ্ছাসেবকের শার্টের কলার ধরে টেনে বুথের বাইরে নিয়ে আসেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। গণটিকাদান কর্মসূচিতে ক্লিনআপ বাংলাদেশ নামে স্থানীয় একটি সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকেরা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। স্বেচ্ছাসেবককে হেনস্তার প্রতিবাদে ওই কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবকেরা একযোগে বেরিয়ে গেলে আধা ঘণ্টা টিকাদান বন্ধ থাকে।

অভিযোগের বিষয়ে একাধিকবার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিল ফরহাদ আলমকে ফোন করা হলেও তিনি সেটি ধরেননি।
ক্লিনআপ বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শুভ্র চক্রবর্তী বলেন, ঘটনাটি সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়। মেয়র ঘটনার সুরাহা করার আশ্বস্ত দিলে বেলা ১১টা থেকে আবার টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়।

মেয়র ইকরামুল হক টিটু প্রথম আলোকে বলেন, উভয় পক্ষের ভুল বোঝাবুঝি থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। বিষয়টি জানার পর তিনি কাউন্সিলরকে টিকাকেন্দ্র থেকে চলে যেতে বলেন। টিকাকেন্দ্র পুনরায় চালু করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেন। এ বিষয়ে আজ বিকেলে নগর ভবনে স্বেচ্ছাসেবক, কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।