সড়ক সংস্কারের কথা বলে বালু–বাণিজ্য

পারকৃষ্ণপুরে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে বালু তুলে মজুত করা হয়েছে। সম্প্রতি দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর এলাকায়।সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর এলাকায় মাথাভাঙ্গা নদী থেকে খননযন্ত্র (ড্রেজার) দিয়ে দুই মাস ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় দুই নেতার বিরুদ্ধে সেখান থেকে বালু তোলার অভিযোগ উঠেছে। এতে তীরবর্তী জমি ভাঙনের কবলে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বালু উত্তোলন বন্ধ করে নদীর তীরবর্তী বাড়িঘর ও ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী গতকাল সোমবার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের চুয়াডাঙ্গা পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ (পওর) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গায় সরকারঘোষিত কোনো বালুমহাল নেই। কিন্তু মাথাভাঙ্গা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। বালু তোলার স্থানের উত্তর-পশ্চিমে পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের পারকৃষ্ণপুর গ্রাম এবং পূর্ব-দক্ষিণে দর্শনা পৌর এলাকার রামনগর ও কালিদাসপুর অবস্থিত।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াবুল হক ও পারকৃষ্ণপুর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান গত মে মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে বালু উত্তোলন শুরু করেন।

এ বিষয়ে জানতে গতকাল জিয়াবুল হক ও হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।

পাউবোর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জহুরুল লিমিটেড স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গার নির্বাহী প্রকৌশলী দপ্তরের মাধ্যমে বালু উত্তোলনের জন্য লিখিত আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পারকৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে বারাদী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজনে বালু উত্তোলন করতে মৌখিক অনুমোদন দেওয়া হয়। এ জন্য প্রতি ঘনমিটার বালুর দাম ধার্য করা হয় ১০ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াবুল হক ও হাবিবুর রহমান বালু উত্তোলন শুরু করেন। প্রথমে তাঁরা পারকৃষ্ণপুর থেকে বারাদী পর্যন্ত রাস্তার জন্য উত্তোলন শুরু করেন। পরে বালুর বাণিজ্যে নেমে পড়েন। শত শত ট্রাক বালু উত্তোলন করে জেলা ও জেলার বাইরে বিক্রি করতে থাকেন।

এ সম্পর্কে পাউবোর চুয়াডাঙ্গা পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ (পওর) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ বলেন, জেলা পানিসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক বালু উত্তোলনের মৌখিক অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এ পর্যন্ত ১০০ ট্রলি বালু উত্তোলন করা হয়েছে, যার আংশিক বিক্রি বাবদ ৫০ হাজার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।