প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন গাইবান্ধা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধায় অপহরণের পর এক ব্যক্তিকে হত্যা ও গুম করা হয়েছে—এমন অভিযোগ করে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে আদালতে একটি মামলা হয়। এরপর ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। কিন্তু মামলার তদন্ত করতে গিয়ে দীর্ঘ ২০ মাস পর কথিত ওই মৃত ব্যক্তিকে পোশাক কারখানায় কর্মরত অবস্থায় খুঁজে পায় পিবিআই। শনিবার দুপুরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে গাইবান্ধা পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ এসব তথ্য জানান।

উদ্ধার ওই ব্যক্তির নাম ওয়াসিম জাহান ওরফে তৌহিদ (২৮)। এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে ওয়াসিমের বড় ভাই মানজুমুল হুদা সুন্দরগঞ্জ আদালতে ওয়াসিমের স্ত্রী জান্নাতি বেগমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওয়াসিমকে অপহরণ করে হত্যা ও গুমের অভিযোগে তখন ওই মামলা করা হয়।

জান্নাতির মা–বাবা টাকা দিতে রাজি না হলে জান্নাতিকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন ওয়াসিম। এই ঘটনায় জান্নতি বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ পারিবারিক জজ আদালতে মামলা করেন।

এদিকে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি আদালত অপহরণ করে হত্যা ও গুমের মামলার তদন্তভার পিবিআইকে হস্তান্তর করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৯ পিবিআইয়ের একটি দল গাজীপুর জেলার মোগরখাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে টিএনজেএড নামের একটি কারখানা থেকে কথিত মৃত ওয়াসিমকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে।

ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার এ আর এম আলিফ জানান, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের ডোমেরহাট সুবর্ণদহ গ্রামের জাহিদুল ইসলামের মেয়ে জান্নাতি বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নিজপাড়া গ্রামের ওয়াসিম জাহানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে জান্নাতি গর্ভবতী হলে স্থানীয় ব্যক্তিদের চাপে ২০১৮ সালের ২৭ মে তাঁদের বিয়ে হয়।

ওয়াসিম দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন পোশাক কারখানায় চাকরি করে আসছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরপর আজ বিকেলে ওয়াসিমকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বিয়ের পর ওয়াসিম দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। জান্নাতির মা–বাবা টাকা দিতে রাজি না হলে জান্নাতিকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন ওয়াসিম। এই ঘটনায় জান্নতি বাদী হয়ে সুন্দরগঞ্জ পারিবারিক জজ আদালতে মামলা করেন। মামলার পর ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ওয়াসিম আত্মগোপন করেন। এরপর ওয়াসিমের বড় ভাই মানজুমুল হুদা সুন্দরগঞ্জ আদালতে ওয়াসিমকে হত্যা ও লাশ গুম করার অভিযোগে মামলা করেন।

এরপর দীর্ঘ তদন্ত শেষে ওয়াসিমের খোঁজ পায় পিবিআই। গাইবান্ধা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে গাজীপুর থেকে ওয়াসিমকে উদ্ধার করা হয়। ওয়াসিম দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন পোশাক কারখানায় চাকরি করে আসছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। এরপর বিকেলে ওয়াসিমকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।