হরতালের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হুমকির তোয়াক্কা করে না সিপিবি: রুহিন হোসেন
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক সরদার রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ‘২৮ মার্চ হরতালের ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে হুমকি দিয়েছেন, তার তোয়াক্কা না করে শান্তিপূর্ণ হরতাল পালিত হবে। যদি কেউ কোনো রকম চাপ দিতে আসে, জনগণই পাল্টা চাপ দিয়ে দেবে। জনগণ এ হরতাল গ্রহণ করেছে। আশা করছি, জনগণ শান্তিপূর্ণভাবেই হরতাল পালন করবে। হুমকি-ধমকি দিয়ে আমাদের পিছু হটানো যাবে না।’
আজ শনিবার মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের সরদার রুহিন হোসেন এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাতে আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে ২৮ মার্চ সারা দেশে অর্ধদিবস হরতালের সমর্থনে লিফলেট বিতরণ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীরা ছিলেন।
‘২৮ মার্চ হরতালে সহিংসতা করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’—সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে রুহিন হোসেন বলেন, ‘শুধু এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী না, অতীতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরাও এ ধরনের কথা বলেছেন। এ ধরনের বক্তব্য তাঁদের কাগজে লেখা থাকে এবং সেই কাগজে লেখা বক্তব্যটা মুখস্থ জাতির সামনে তুলে ধরেন। বিষয়টি আমরা আমলেই নিচ্ছি না।’
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে অন্তত তিনটি কাজ না করলে আমরা এখান থেকে নিস্তার পাব না। একটি হচ্ছে, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে দক্ষ ও দুর্নীতিমুক্তভাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাম্পার স্টক গড়ে তুলতে হবে এবং এটি হতে হবে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে। তাহলেই কেবল একটি বিকল্প বাজারব্যবস্থা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ন্যায্যমূল্যে পর্যাপ্ত পণ্য তুলতে হবে এবং রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। এগুলোর জন্য আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। দেশবাসীর কাছে এটি আমাদের প্রধান অঙ্গীকার।’
সমাজে বৈষম্য বেড়েছে উল্লেখ করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতার অন্যতম বিষয় ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন করা। ধনী-গরিবের বৈষম্য দূর করা। আমরা এখন দেখি, সমাজে বৈষম্য পাহাড়সম। স্বাধীনতার আগে সম্পদ পাচার হতো পাকিস্তানে আর এখন পাচার হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে।’
দেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘আজ দেশে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গণতন্ত্র নির্বাসিত। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির দাপট চলছে। আমরা মনে করি, এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সবাইকে জেগে ওঠা দরকার। এ জন্য প্রয়োজন একটি নীতিনিষ্ঠ রাজনৈতিক সমাবেশ। আমরা মনে করি, এবারের স্বাধীনতা দিবসকে সামনে রেখে জনগণ আবারও জেগে উঠবে।’
রুহিন হোসেন বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ে সরকার যে ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে এবং গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়ার যে অপতৎপরতা চালাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমরা হরতাল ডেকেছি। এ হরতাল কোনো দলীয় হরতাল নয়, এ হরতাল দেশের সব জনগণের হরতাল। সবাই আজ দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত। তাই সবাই সম্মিলিতভাবে হরতাল পালন করে সরকারের অপশাসন ও গণবিরোধী শাসনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করবে বলে আমি আশা করি।’