হালদার শাখাখালে ভাসছিল মরা ডলফিন

হালদার শাখাখাল থেকে উদ্ধার করা মৃত ডলফিন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মেখল ইউনিয়নের সর্তারঘাট এলাকায়।ছবি: সংগৃহীত

দেশের কার্পজাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীর শাখাখাল থেকে একটি মৃত ডলফিন উদ্ধার হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকালে উপজেলার মেখল ইউনিয়নের মুফতি ফজলুল্লাহ সড়কের সেতুর নিচে মৃত অবস্থায় ভাসতে দেখে ডলফিনটি ডাঙায় তুলে আনেন কয়েকজন তরুণ। দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসে ডলফিনটি উদ্ধার করে নিয়ে যান।

ডলফিনটি ডাঙায় তুলে আনা তরুণ মুহাম্মদ শওকত হোসেন সাংবাদিকদের জানান, সকালে তিনি খালে ডলফিনটি ভাসতে দেখেন।

মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার হওয়া ডলফিনটির শরীরে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। এটি প্রায় ১০ ফুট লম্বা আর ওজন ১২০ কেজি হতে পারে। এর আগে গত বছরের ১৪ আগস্ট হালদা নদীর ও কর্ণফুলীর মোহনা নগরের চান্দগাঁও থানার মোহরা ওয়াসা এলাকায় একটি মরা ডলফিন পাওয়া গিয়েছিল। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত সাড়ে তিন বছরে এটিসহ মোট ২৯টি ডলফিন মরে ভেসে ওঠে হালদা ও এর শাখাখালে। আগের প্রায় সব মরা ডলফিনের শরীরে আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত করেছিল উদ্ধারকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। একাধিক ডলফিনকে কেটে হত্যাও করা হয়েছিল।

হালদা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) লাল তালিকাভুক্ত (অতি বিপন্ন প্রজাতি) একটি জলজ প্রাণী এই ডলফিন। বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে অতি বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন আছে মাত্র ১ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে শুধু হালদাতেই ছিল ১৭০টি।

নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মঞ্জুরুল কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, আগে নদীতে মৃত উদ্ধার হওয়া ডলফিনগুলোর সঙ্গে এটির ভিন্নতা রয়েছে। এটির শরীরে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, বয়সের কারণে ডলফিনটির স্বাভাবিক মৃত্যু হতে পারে বলে তাঁর ধারণা।