সদর উপজেলার পুলহাট এলাকা থেকে পাঁচ বছর বয়সী মেয়েকে ডায়রিয়ার কারণে এই হাসপাতালে ভর্তি করেছেন আরিফুল ইসলাম। শনিবার থেকে মেয়ের পাতলা পায়খানা শুরু হয়েছে। সঙ্গে বমিও করছে। কোনো কিছু খাওয়ালে বমির সঙ্গে বের করে দিচ্ছে।
সদর উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের বীরগাঁও গ্রাম থেকে ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছেন আবদুল কাদের (৫৫)। রাত থেকে পায়খানা শুরু হয়েছে তাঁর। তিনি বলেন, ‘খাওয়াদাওয়ায় কোনো অনিয়ম করিনি। কিন্তু তারপরও ডায়রিয়া হলো।’ পায়খানার সঙ্গে দুপুর থেকে শ্বাসকষ্টও বোধ করছেন তিনি।
সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রমা রানী হাসপাতালের রেজিস্টার দেখে জানান, আজ দুপুর পর্যন্ত এই হাসপাতালে মোট রোগী ভর্তি আছে ২১৩ জন। এর মধ্যে ৪৪ জন ডায়রিয়া রোগী। চলতি মাসের শুরু থেকে ডায়রিয়া রোগী বাড়তে থাকে। আজ দুপুর পর্যন্ত ভর্তি হয়েছেন ৮ জন। মাসের শুরুতে ২৫-৩০ জনের মধ্যে থাকলে বর্তমানে ৪৫-৫০ ছাড়িয়েছে। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার ৬৫ জন রোগী ভর্তি ছিল।
দিনাজপুরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) পারভেজ সোহেল রানা বলেন, সদ্য শীতকালীন আবহাওয়া শেষ হয়েছে। মানুষের খাদ্যাভাসের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে পারতপক্ষে খাবার হালকা গরম থাকা অবস্থায় গ্রহণ করতে হবে। এই সময়গুলোতে মশা-মাছির উপদ্রব থাকে। সেই দিক থেকে নিজের হাত ধোয়া, পরিস্কার–পরিচ্ছন্ন থাকার পাশাপাশি বাসন পরিস্কার রাখতে হবে। অসুস্থ হয়ে গেলে অবশ্যই ঘন ঘন খাবার স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে।
ডায়রিয়া ব্যাপকতায় করোনার কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ডায়রিয়া ও বমি দুটিই করোনাভাইরাসের লক্ষণ বলে আমরা জানি। এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে করোনাও কিছুটা ঊর্ধমুখী। তাই ডায়রিয়া রোগী বাড়ার ক্ষেত্রে করোনার সম্পৃক্ততা থাকতেও পারে। আমরা প্রতিটি রোগীকে বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণে রাখছি।’