১৩টির মধ্যে ৬টি স্থায়ী কমিটিই নেই

ময়মনসিংহ বিভাগ

ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) কাজ সুষ্ঠুভাবে করার জন্য ১৩টি বিষয়ে একটি করে স্থায়ী কমিটি গঠন করার কথা আইনে বলা আছে। স্থায়ী কমিটির সুপারিশ পরিষদের সভায় বিবেচনা করে গ্রহণ করার বিধানও রয়েছে। কিন্তু ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার পয়ারী ইউনিয়নে স্থায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে ৭টি। ইউপি সদস্যরা বলছেন, এসব কমিটিও কার্যকর নয়।

ইউপির একাধিক সদস্য বলেন, এসব কমিটির আসলে কোনো কাজ নেই। কোন এলাকার রাস্তাঘাটের কাজ হবে, তা চেয়ারম্যানই নির্ধারণ করেন। অবশ্য চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা নিয়মিত হয়।

পয়ারী ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কমিটির সভা হয় গত ৩ অক্টোবর। এতে সভাপতিত্ব করেন ইউপি চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, নারী উত্ত্যক্তকরণ প্রতিরোধে জুমার নামাজের আগে মসজিদে মসজিদে বয়ান করা হবে। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে উদ্বুদ্ধকরণ সভা করারও সিদ্ধান্ত হয়।

সভায় শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পয়ারী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আয়ুব আলী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সার্বিকভাবে ইউনিয়নের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো। তবে উপস্থিত সদস্যরা নারী উত্ত্যক্তের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। চেয়ারম্যান কমিটির সদস্যদের কথা শুনে মসজিদে বয়ানের সিদ্ধান্ত নেন।

স্থায়ী কমিটি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ডের ভালোমন্দের বিষয়ে সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। কমিটি করা হয়েছে, সেগুলো নিজেদের মতো করে আলোচনা করে।

সেতুর অভাবে বিচ্ছিন্ন

পয়ারী ইউনিয়নটি খাড়িয়া নদী দিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত। নদীর এক পারে ইউনিয়নের গুপ্তেরগাঁও, শাহপুর, আমুয়াকান্দাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। কিন্তু এসব গ্রাম থেকে ইউনিয়নে আসার জন্য কোনো কালভার্ট বা সেতু নেই। স্থানীয় লোকজন দুটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ফুলপুর উপজেলার প্রকৌশলী মামুনুর রশীদ প্রথম আলোকে বলেন, গুপ্তেরগাঁও গ্রামে সেতু নির্মাণে মাঠপর্যায়ের জরিপকাজ শেষ হয়েছে। ময়মনসিংহের বিভাগীয় দপ্তরে কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।

কাঁচা সড়কে ভোগান্তি

পয়ারী ইউনিয়নে মোট সড়ক আছে ২১৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাকা সড়ক মাত্র ৬ কিলোমিটার। ইট বিছানো সড়ক সাড়ে ৪ কিলোমিটার। বাকি সব সড়কই কাঁচা। স্থানীয় লোকজন বলেন, এলাকার প্রায় সব রাস্তাই কাঁচা। বর্ষাকালে চলাচলে কষ্ট বেশি হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম বলেন, যা বরাদ্দ আসে, সে অনুপাতে ইউনিয়নের সড়ক সংস্কারের কাজ করা হয়। কয়েকটি সড়ক পাকা করার জন্য উপজেলায় তালিকা পাঠানো হয়েছে। রাস্তাঘাটের কাজের ব্যাপারে সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।