এর বাইরে ছোট আরও ৮৫০ কারখানায় দৈনিক গড়ে ২০০ কেজি হিসাবে তৈরি হয় ৬২ লাখ ৯ হাজার কেজি। ১৫০ টাকা হিসাবে এর দাম ৯৪ কোটি টাকা।
রাজা লাচ্ছা সেমাই কারখানার মালিক রাজা মিয়া বলেন, লাচ্ছা সেমাইয়েরও প্রসার ঘটে চল্লিশের দশকেই। শুরুর দিকে কলকাতা ও হুগলি থেকে সবুজ, হলুদ, গোলাপি, সাদা, কমলা ও জাফরানি নানা রঙের লাচ্ছা এনে বগুড়ায় বিক্রি শুরু করে ক্যালকাটা বেকারি ও হুগলি বেকারি। শুরুতে পাম তেল ও সয়াবিন তেলে লাচ্ছা ভাজা হতো। আকবরিয়া বেকারিতে পরে ডালডা ও ঘিয়ে ভাজা লাচ্ছার প্রচলন শুরু হয়।
এশিয়া সুইটসের কারখানায় দুই দশক ধরে লাচ্ছা তৈরি করছেন প্রধান কারিগর আবদুল কাদের। বর্তমানে তাঁর সঙ্গে আরও ১৩ জন কারিগর কাজ করছেন। এ কাজ করে দৈনিক ১ হাজার ২০০ টাকা পারিশ্রমিক পান।
সেমাই কারিগরেরা বলেন, চল্লিশের দশকে ভারত ও পাকিস্তান থেকে কয়েকজন কারিগর এসে বগুড়া শহরতলির চারমাথা-গোদারপাড়া এলাকায় চিকন সেমাই বানানো শুরু করেন। গোদারপাড়ার কারিগরদের সঙ্গে কাজ করতেন বেজোড়া এলাকার কয়েকজন। এর অল্প দিনেই বেজোড়া এলাকা ‘চিকন সেমাইপল্লি’ হিসেবে খ্যাতি পায়।
বেজোড়া গ্রামের কারিগর মাকসুদা বেগম বলেন, বেজোড়া, ঘাটপাড়া, শ্যাঁওলাগাতি, কালসিমাটি, শ্যামবাড়িয়া, রবিবাড়িয়াসহ আশপাশের ৮ থেকে ১০টি গ্রামের নারীদের হাতে প্রায় ৫০ বছর ধরে তৈরি হচ্ছে সুস্বাদু চিকন সেমাই। রোজার এক-দেড় মাস আগে থেকেই বিভিন্ন জেলা থেকে চিকন সেমাইয়ের ফরমাশ আসতে শুরু করে। প্রতি কেজি চিকন সেমাই এবার গড়ে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে চলতি মৌসুমে লাচ্ছা ও চিকন সেমাইয়ের দাম গত বছরের তুলনায় কেজিতে গড়ে ৫০ টাকা বেড়েছে। ময়দা, ভোজ্যতেলসহ কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এবার দাম চড়া বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি মাফুজুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর সেমাইয়ের ব্যবসা মন্দা ছিল। এবার ব্যবসায় চাঙাভাব বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীদের সহজ শর্তে ঋণসুবিধা দিতে হবে।