৩৬ দিন বন্ধ থাকার পর কুয়েটে ক্লাস শুরু
অধ্যাপক সেলিমের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হয়।
টানা ৩৬ দিন পর খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের পদচারণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আবারও মুখর হয়ে উঠেছে। গতকাল রোববার সকালে ক্লাস শুরুর নির্ধারিত সময়ের আগেই নিজ নিজ বিভাগে উপস্থিত হন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থী উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক।
এর আগে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব খুলে দেওয়া হয়। ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলাবিধি মেনে চলতে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কুয়েট প্রশাসন। গত বৃহস্পতিবার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকেরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক সেলিম হোসেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কার কারণে ৩ থেকে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে ওই দিন বিকেল চারটার মধ্যে আবাসিক ছাত্রছাত্রীদের হলগুলো ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে সেই ছুটি দুই দফা বাড়ানো হয়।
এদিকে গত বুধবার কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ানসহ চার শিক্ষার্থীকে চিরতরে বহিষ্কার করেছে ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটি। এ ছাড়া আরও ৪০ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন শাস্তি দেওয়া হয়েছে। ওই শিক্ষার্থীরা সবাই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
গত ৩০ নভেম্বর ইইই বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সেলিম হোসেন ক্যাম্পাসের কাছের ভাড়া বাসায় মারা যান। ওই শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল ছুটি ঘোষণা করা হয়। তাঁর মৃত্যুর পর অভিযোগ ওঠে, মৃত্যুর দিন দুপুরে বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক সেলিমকে বিভাগে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর ওপর মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি বলছে, এটি হত্যাকাণ্ড। অধ্যাপক সেলিমের পরিবারও এটিকে হত্যাকাণ্ড বলে অভিযোগ করেছে।