৯৯৯-এ ফোন, ঘরের দরজা ভেঙে মিলল স্বামী-স্ত্রীর লাশ
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ঘরের ভেতর থেকে গৃহবধূর গলাকাটা এবং ঝুলন্ত অবস্থায় তাঁর স্বামীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের টানমেউহারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
এই দম্পতি হলেন বাচ্চু মিয়া (৫৬) এবং তাঁর স্ত্রী শাদিনা বেগম (৪৯)। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই দম্পতি ঘরের দরজা বন্ধ করে ঝগড়া করছিলেন। একপর্যায়ে তাঁদের মেয়ে রিপা আক্তার জাতীয় জরুরি সেবায় (৯৯৯) ফোন করে সাহায্য চান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ঘরের দরজা ভেঙে লাশ দুটি উদ্ধার করে।
ধর্মপাশা থানা–পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাচ্চু মিয়া মাছের ব্যবসা করতেন। সম্প্রতি তাঁর ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সময়মতো পাওনাদারদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া চলছিল। আজ সকাল থেকেই বাচ্চু মিয়া ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা চলছিল।
সকাল ১০টার দিকে এই দম্পতির বড় মেয়ে রিপা আক্তার তাঁর ছোট ভাই অনিক মিয়াকে স্কুলে ভর্তি করার জন্য উপজেলা সদরের জনতা মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে যান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রিপার ভাগনে আবু রায়হান তাকে মুঠোফোনে জানায়, নানা–নানি ঘরের দরজা বন্ধ করে ঝগড়া করছেন। এ সময় রিপা ৯৯৯–এ কল করে পুলিশের সহায়তা চান।
খবর পেয়ে দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ধর্মপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় সেখানে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় দরজা ভেঙে পুলিশ ঘরে ঢুকে শাদিনা বেগমের গলাকাটা লাশ এবং ঝুলন্ত অবস্থায় বাচ্চু মিয়ার লাশ উদ্ধার করেন।
রিপা আক্তার বলেন, সব মিলিয়ে তাঁর বাবার ৮৫ হাজার টাকা ঋণ হয়েছিল। এই টাকা দেওয়ার জন্য তাঁর বাবা প্রায়ই তাঁর মাকে চাপ দিতেন। টাকা দেওয়া নিয়ে মা–বাবার মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। তাঁর ধারণা, ঘরের ধারালো দা দিয়ে বাবা মাকে হত্যার পর নিজে ফাঁস দিয়েছেন।
ধর্মপাশা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, স্বামী–স্ত্রীর ঝগড়ার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত দম্পতির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্তের প্রস্তুতি চলছে।