হবিগঞ্জ শহরের ‘আদি গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডার’ এর রসগোল্লার বেশ নামডাক
ছবি: প্রথম আলো

হবিগঞ্জ শহরের বাণিজ্যিক এলাকার একটি মিষ্টির দোকান ‘আদি গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডার’। এই দোকানের রসগোল্লার বেশ নামডাক। স্বাদে-মানে হবিগঞ্জের মানুষের কাছে প্রিয় ‘আদি গোপালের রসগোল্লা’। শুধু জেলায় নয়, জেলার বাইরেও সুনাম রয়েছে এই মিষ্টির।

আরও পড়ুন

কুড়িগ্রামে ৮৪ বছরের পুরোনো ‘ঝন্টু মিষ্টান্ন ভান্ডার’, এক নামে চেনে সবাই

আদি গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী নেপাল চন্দ্র দাশ ৪৪ বছর ধরে দোকানটি চালাচ্ছেন। ৭২ বছর বয়সী এই মিষ্টি ব্যবসায়ী বলেন, তরুণ বয়সে মিষ্টির দোকানে চাকরি করেছেন। পরে নিজে মিষ্টির দোকান দিয়েছেন। মিষ্টি নিয়েই কেটে গেছে জীবনের বড় একটি অংশ। তাঁর ছেলেরা পড়াশোনা শেষে ব্যবসা পরিচালনায় তাঁকে সহযোগিতা করছেন।

আরও পড়ুন

৮৫ বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে ‘দত্তের মিষ্টি’র সুনাম

রস ফুটে উঠলে ছানার বলগুলো দিতে হয়
ছবি: প্রথম আলো

রসগোল্লা বানানো বিষয়ে এই দোকানের কারিগর রুনু দাস বলেন, গরুর দুধ, ময়দা ও চিনি দিয়ে তৈরি হয় মোলায়েম রসগোল্লা। প্রথমে দুধ জ্বাল দিতে হয়। ফুটে উঠলে তাতে লেবুর রস দিয়ে ছানা তৈরি করতে হয়। ছাকনির ওপর কাপড় রেখে ছানা ঢেলে নিতে হয়। সঙ্গে সঙ্গে ছানার ওপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে আধা ঘণ্টার মতো কাপড়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখতে হয়। এরপর ছানা, এলাচিগুঁড়া ও চিনি একটি থালায় নিয়ে হাতের তালুর সাহায্যে ১০ মিনিট মেখে মসৃণ মণ্ড তৈরি করতে হয়। ছানার মণ্ড অল্প নিয়ে ছোট বল বানিয়ে রসগোল্লার আকারে তৈরি করে নিতে হবে। আলাদা পাত্রে মাঝারি আঁচে জ্বাল দিয়ে রস তৈরি করতে হবে। রস ফুটে উঠলে ছানার বলগুলো দিতে হয়। বলগুলো ফুলে উঠলে গ্যাস বন্ধ করে দিয়ে দুই থেকে তিন ঘণ্টা ঠান্ডা করতে হবে। এভাবে তৈরি হয় রসগোল্লা। একেকটি রসগোল্লার ওজন ৭০ থেকে ৮০ গ্রাম হয়ে থাকে। এক কেজিতে ১২ থেকে ১৩টি রসগোল্লা ধরে। এক কেজি রসগোল্লা বিক্রি হয় ৩০০ টাকায়।

আরও পড়ুন

ঝালকাঠির ‘রসে ভরা রসগোল্লা’ একবার খেলে বারবার খেতে মন চায়

হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজের শিক্ষক আবদুল রকিব প্রথম আলোকে বলেন, চার দশকের বেশি সময় ধরে তৈরি হচ্ছে আদি গোপালের রসগোল্লা। এটি জেলার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি হয়ে গেছে। এই মিষ্টির স্বাদ ও মান অনন্য হওয়ায় চাহিদা একটু বেশি। এখানকার মানুষ এলাকার বাইরে বেড়াতে গেলে এই মিষ্টি নিয়ে যান। এতে আত্মীয়স্বজনও বেশ খুশি হন।

আরও পড়ুন

বদলগাছির ‘দাদুর সন্দেশ’ মন ভোলায় সবার

‘আদি গোপাল মিষ্টান্ন ভান্ডার’ পরিচালনায় বাবাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী ছেলে বিকাশ দাশ। তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু মিষ্টির মান নিয়েই এগিয়ে আছি, তা নয়। জেলার সর্বোচ্চ করদাতা হিসেবেও আমরা এগিয়ে। বাবা সব সময় শিক্ষা দিয়েছেন, সততার সঙ্গে ব্যবসা করার। এখন মিষ্টির উপকরণের দাম অনেক বেড়েছে। তারপরও আমরা দাম বাড়াইনি। মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রেখেই ব্যবসা করছি।’

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আদি গোপালের রসগোল্লা, রসমালাই ছাড়াও জয় গোপালের রসগোল্লাও স্বাদে ভালো।

আরও পড়ুন

৫৮ বছর ধরে মন ভরাচ্ছে মানিকগঞ্জের ‘নিজামের মিষ্টি’