বগুড়ায় ‘ব্যবহারিকের নম্বর যোগ না হওয়ায়’ এসএসসিতে ২৩ শিক্ষার্থী ফেল
তাত্ত্বিক পরীক্ষায় পাস করলেও ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর যোগ না হওয়ায় বগুড়ার কাহালু সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৩ পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেন্দ্র সচিবের গাফিলতিকে দায়ী করছে। তাদের ভাষ্য, ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিলেও শিক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বর যথাসময়ে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে পাঠাননি পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব। এতে এই ফল বিপর্যয় ঘটেছে।
কাহালু সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় এই বিদ্যালয় থেকে ১০৮ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থী ছিল ২৩ জন। এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল একই উপজেলার কাহালু তাইরুনেচ্ছা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়।
গত শুক্রবার প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা যায়, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় ব্যবসায় শিক্ষার ২৩ শিক্ষার্থীর কেউ পাস করেনি। পরে শিক্ষার্থীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, ব্যবহারিক পরীক্ষায় তাদের ফেল দেখানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা কাহালু সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে।
প্রধান শিক্ষক রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে পারেন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৩ শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর যোগ হয়নি। পরে তিনি এর সমাধান চেয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর আবেদন করেন।
শাহাদত জামাল নামের এক পরীক্ষার্থী বলে, ‘সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছি। শুধু তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিষয়ে ফেল দেখানো হয়েছে। ভালো পরীক্ষা দিয়েও কেন নম্বর আসেনি, এটা তদন্ত করে এখনই ফল প্রকাশ করা দরকার।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিভাবক বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর বোর্ডে পাঠানোর দায়িত্ব কেন্দ্র সচিবের। ব্যবহারিক নম্বর যোগ না হওয়ায় সবাই ফেল করেছে। কেন্দ্র সচিবের গাফিলতিতে এমনটা ঘটেছে।
কাহালু সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এফ এম এ ছালাম বলেন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ২৩ শিক্ষার্থীর ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর বোর্ডে না পাঠানোর কারণে সবাই ফেল করেছে। কেন্দ্র সচিবের গাফিলতিতে এমন ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত সমস্যার সমাধানের জন্য রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
নম্বর যোগ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে কাহালু তাইরুনেচ্ছা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব বেলাল উদ্দিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে কাহালু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু মুসা বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর না পাঠানোর অভিযোগ তদন্ত করা হবে। কেন্দ্র সচিবের গাফিলতি প্রমাণ হলে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় কেন্দ্রসচিবকে বোর্ডে তলব করা হয়েছে। তাঁর কাছ থেকে ব্যাখ্যা পাওয়া গেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে কার ভুলে এমনটা ঘটেছে।