সরকারি শিশু পরিবারের থেকে পড়াশোনা, জিপিএ-৫ অর্জন শাকিবের
শত বাধা ডিঙিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে নীলফামারী সরকারি শিশু পরিবারের সদস্য শাকিব হোসেন। সে দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের অধীন নীলফামারী কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এ ফল অর্জন করে।
শাকিব হোসেন বলে, তার জন্মের এক বছরের মাথায় মা–বাবার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর মা ও বাবা অন্য স্থানে বিয়ে করে আলাদা সংসার শুরু করেন। তার ঠাঁই হয় দরিদ্র দাদা-দাদির কাছে। দাদা হালিম উদ্দিন ২০১৩ সালে তাকে নীলফামারী সরকারি শিশু পরিবারে রেখে যান। সেখানেই তার বেড়ে ওঠা। এবার সে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।
শাকিব হোসেনের বাবা মো. সফিয়ার রহমান ও মা জাহেদা বেগম। বাবার বাড়ি নীলফামারী জেলা সদরের চওড়া বড়গাছা ইউনিয়নের উত্তর চওড়া গ্রামে।
নীলফামারী সরকারি শিশু পরিবারের বড় ভাইয়া পদে কর্মরত আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘শাকিব হোসেন প্রথম শ্রেণিতে সরকারি শিশু পরিবারে ভর্তি হয়। এখানে থেকে সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ফলও ভালো করেছে। ছেলেটা অনেক মেধাবী। তাকে একটু সহযোগিতা দেওয়া হলে সে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ১৮ বছর বয়স হলে আমরা আর কাউকে সরকারি শিশু পরিবারে রাখতে পারি না। এ জন্য তাকে এখান থেকে চলে যেতে হয়েছে।’
শিশু পরিবারের উপতত্ত্বাবধায়ক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হৃদয় হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ১৮ বছরের পর কাউকে এখানে রাখা যায় না। তবে মেধাবী শিক্ষার্থী শাকিবের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি বিশেষ কোনো নির্দেশ দেয়, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শাকিব হোসেন বলে, এসএসসি পরীক্ষা দেওয়ার দুই মাস পর তার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে। এ জন্য নিয়ম অনুযায়ী সরকারি শিশু পরিবার থেকে তাকে চলে যেতে হয়েছে। বর্তমানে তার দাদি শরিফা খাতুন ও ভাই কামরুল ইসলামের বাড়িতে তাকে থাকতে হচ্ছে। ভবিষ্যতে কীভাবে লেখাপড়া চালিয়ে যাবে, তা বুঝে উঠে পারছে না। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন শাকিবের।