বিভিন্ন আকারের ইলিশ নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। আজ মঙ্গলবার সকালে ফেনীর সোনাগাজী পৌর বাজারে
ছবি: প্রথম আলো

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় বড় ও ছোট ফেনী নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে ইলিশ মাছ। একেকটির ওজন এক থেকে দুই কেজি পর্যন্ত। গতকাল সোমবার উপজেলার স্থানীয় জেলেদের জালে শতাধিক বড় ইলিশ ধরা পড়েছে। মাছের প্রজনন মৌসুমে নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় জেলেরা এখন উপকৃত হচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

গতকাল সকালে ইলিশ ধরতে ১০টি ট্রলার ও নৌকা নিয়ে উপজেলার চর খোন্দকার ও আদর্শগ্রাম এলাকার ৩৫ থেকে ৪০ জন জেলে বড় ও ছোট ফেনী নদীর শেষ প্রান্তে বঙ্গোপসাগরের মোহনায় দুই দফা জাল ফেলেন। জাল টেনে নৌকায় তুলতেই সবাই দেখতে পান, বড় বড় ইলিশ ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ৮টির ওজন আড়াই কেজি, ৩৫টির ওজন ২ কেজির বেশি। ছোট-বড় সব মিলে আরও প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মণ ইলিশ ওঠে ওই জালে।

আরও পড়ুন

এক টানে ১৭০ মণ ইলিশ, দাম অর্ধকোটি টাকা

জেলে আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, পৌর শহরের পাইকারি মাছ বিক্রেতা আবদুল মান্নান, মিন্টু মিয়া, জাফর আহমেদসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী যৌথভাবে ৯ লাখ ৮০ হাজার টাকায় তাঁদের প্রায় ৩০ মণ ইলিশ কিনে নেন।

মৎস্য ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান বলেন, মাছগুলো বিক্রি করার জন্য গতকাল সন্ধ্যায় ও আজ মঙ্গলবার সকালে পৌর শহরের মাছবাজারে নিয়ে আসেন তাঁরা। উৎসুক অনেকে বড় ইলিশ দেখতে বাজারে ভিড় করেন। আড়াই কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার টাকা, ২ কেজির ইলিশ ১ হাজার ৮০০ টাকা ও ১ কেজির ইলিশ ১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন তাঁরা। সব মিলে অন্তত ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার মাছ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।

আরও পড়ুন

ফেনী নদীতে ধরা পড়ল আড়াই ও দুই কেজির ৫০টি ইলিশ

বাজারে কথা হয় নজরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ইলিশ তাঁর প্রিয় মাছ। বড় ইলিশ দেখে তিনি আড়াই ও ২ কেজি ওজনের ৫টি ইলিশ ২০ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছেন। বড় মাছ দেখে বাড়ির সবাই খুব খুশি হবে বলে জানান তিনি।

সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, নিত্যপণ্য ও খাদ্যসামগ্রীর বাজারের মতো মাছের বাজারেও সিন্ডিকেট হয়ে গেছে। ব্যাপারীরা নদীর তীরের ঘাট ও আড়ত থেকে কম দামে প্রচুর পরিমাণে মাছ কিনে বাজারে নিয়ে আসেন। পরে সেই মাছের অর্ধেক ফ্রিজে লুকিয়ে রেখে বাজারে মাছের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান ক্রেতারা।

নদী ও সাগরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বংশবিস্তার বেড়েছে জানিয়ে উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা তূর্য সাহা বলেছেন, সরকারি বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় স্থানীয় জেলেরা উপকৃত হচ্ছেন। ফলে নদী ও সাগরে টানা ও বসানো জালে এখন ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে। সামনে আরও বড় বড় মাছ ধরা পড়বে বলে তিনি আশা করছেন।