কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

উজানের পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম ভারী বর্ষণে আজ সোমবার কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদ–নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।

এসব এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। জ্বালানির অভাবে একবেলা রান্না করে তা দিয়েই দিন কাটাচ্ছে অনেকে। বন্যাকবলিত এলাকার কাঁচা-পাকা সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণ জনগণকে কলাগাছের ভেলা ও ছোট নৌকায় চলাচল করতে হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাফিজুর রহমান জানান, বর্তমান পরিস্থিতির কারণে সব দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব উপজেলাসহ জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বন্যাসংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, সকালে ধরলা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র ৯৮ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নুনখাওয়ায় ৬৫ সেন্টিমিটার, তিস্তা ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। চর, দ্বীপচর, নদীসংলগ্ন ইউনিয়ন—সবই এখন পানিতে ভাসছে। কোনো কোনো এলাকায় দু-একটি উঁচু ভিটা ছাড়া শুকনো জায়গা খুঁজে পাওয়া ভার।

জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত কুড়িগ্রাম জেলায় ৭৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ৫২টি ইউনিয়নের ২৬২টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৭৭টি অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে গতকাল পর্যন্ত ৩ হাজার ৮০০ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

জেলা ত্রাণ অফিস জানায়, নয় উপজেলায় ২৮০ টন চাল, দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এক হাজার টন চাল, ২০ লাখ টাকা ও ১০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কাছে ২২০ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা মজুত রয়েছে।