সোমেশ্বরী নদী বাঁচাতে আইনি নোটিশ

সোমেশ্বরীর বুকে অসংখ্য অবৈধ ড্রেজার। খুবলে নেওয়া হচ্ছে বালু। অতি সম্প্রতি তোলা
ছবি: প্রথম আলো

বালুখেকোদের হাত থেকে সোমেশ্বরী নদীকে বাঁচাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আইনি নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)। আজ রোববার বেলার পক্ষে আইনজীবী এস হাসানুল বান্না ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। নোটিশে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে।

এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রাহমান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী, জাতীয় রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার শফিকুর রেজা বিশ্বাস, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আশরাফ উদ্দিন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ, নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক কাজী মো. আবদুর রহমান, পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী, নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব-উল-আহসান ও দুর্গাপুর পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ আলা উদ্দীনকে। নোটিশে মেয়র আলা উদ্দীন নিজেও বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০ জানুয়ারি ‘বালুখেকোদের হাতে সোমেশ্বরীর সর্বনাশ’ শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই সংবাদ সংযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বেলা এই আইনি নোটিশ পাঠায়।

আরও পড়ুন

নোটিশে বলা হয়, পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) নেত্রকোনার দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদী রক্ষা ও নদীতে বালুমহাল ইজারা প্রদানসংক্রান্ত বিষয়ে ২০১৫ সালে একটি জনস্বার্থমূলক মামলা করে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সোমেশ্বরী নদী থেকে বালু ও পাথর উত্তোলন ও নিয়ন্ত্রণ এবং বালু, পাথর ও মাটি উত্তোলনে পাম্প ও ড্রেজার মেশিন ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিরোধে বিবাদীদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়ে বারবার নোটিশ প্রেরণ করা হলেও সোমেশ্বরী নদী থেকে বালু উত্তোলনের বর্তমান চিত্র বিবাদী কর্তৃক আইন প্রয়োগে ব্যর্থতার ও আদালতের আদেশের প্রতি চরম অবজ্ঞা ও উদাসীনতার পরিচায়ক।

নোটিশে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি সোমেশ্বরী নদীতে ঘোষিত বালুমহাল থেকে বালু ও পাথর উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ এবং বালু, পাথর ও মাটি উত্তোলনে পাম্প ও নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিনের ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে নদী ও নদীসংলগ্ন জনবসতির বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় বালুমহাল ইজারার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর পুনরায় ইজারা প্রদান থেকে বিরত থাকতে এবং প্রয়োজনে বালুমহাল বিলুপ্তি ঘোষণা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।