রাজধানীতে কালবৈশাখী

দিনের খরতাপ দেখে কে ভেবেছিল বিকেল গড়াতেই এমন বৃষ্টি নামবে। তা-ও রীতিমতো বজ্রবৃষ্টিসহ কালবৈশাখী হানা দিয়েছিল রাজধানীর বুকে। বিকেল পাঁচটা থেকে আকাশ কালো করে মেঘ দিয়েই বৃষ্টি আসার আগমনের জানান দিয়েছিল প্রকৃতি। ছয়টার দিকে বৃষ্টি, বজ্রপাত আর ঝোড়ো হাওয়া একযোগে তাণ্ডব চালায় রাজধানীজুড়ে।

কালবৈশাখীর আঘাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার গাছপালা ভেঙে পড়ে। অনেক স্থানে সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে। অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টি হওয়ায় পুরান ঢাকা, মিরপুরের কাজীপাড়া-শেওড়াসহ বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টার মধ্যেই ১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই সময়ে বাতাস ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার বয়ে যায়, যা সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া দপ্তর। এই বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়াকে মাঝারি শক্তির কালবৈশাখী হিসেবে চিহ্নিত করে আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, আকাশে বজ্রমেঘ থাকায় রাজধানীর অনেক এলাকাতেই বজ্রপাত হয়েছে।

তবে আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আগামীকাল দেশে দাবদাহ ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি দুইই বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি মাত্রার ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যদিকে যশোর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, পাবনা ও সৈয়দপুর অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, চাঁদপুর, মাইজদীকোর্ট ও পটুয়াখালী অঞ্চলসহ খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অবশিষ্ট বিভাগের ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে ।

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, মে মাসের বাকি সময়জুড়ে থেমে থেমে বৃষ্টি হতে পারে। আর বাকি সময় গরমের তীব্রতা অব্যাহত থাকবে। জুনের প্রথম সপ্তাহে বঙ্গোপসাগর দিয়ে মৌসুমে বায়ু আসতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বৃষ্টিপাত নিয়মিতভাবে শুরু হলে তাপমাত্রা কমে আসবে।

আবহাওয়া দপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, আজ রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গা ও ঈশ্বরদীতে ৪১ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া সৈয়দপুর, রাজশাহীসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ছিল। দেশের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ফরিদপুরে ২৫ মিলিমিটার।