সংখ্যালঘুদের ভোট না পেলে ৬২টি আসনে জয় পাবে না আ.লীগ : শাহরিয়ার কবির

‘অব্যাহত শিক্ষক নির্যাতন, নিপীড়ন ও হত্যার প্রতিবাদে’ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী সমাবেশের আয়োজন করে। শাহবাগ, ঢাকা
ছবি: প্রথম আলো

সংখ্যালঘু সম্প্রদায় যদি সিদ্ধান্ত নেয় ভোট দেবে না, তাহলে জাতীয় সংসদের নির্দিষ্ট ৬২টি নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগ জয়ী হতে পারবে না বলে মনে করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘আপনারা আবার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কী জবাব দেবেন বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে? আপনাদের বলতে হবে, যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম রক্ষা করিনি। ৬২টি নির্বাচনী এলাকা (সংসদীয় আসন) আছে, যদি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সিদ্ধান্ত নেয় যে আওয়ামী লীগকে ভোট দেব না—এসব নির্বাচনী এলাকা থেকে আপনারা নির্বাচিত হতে পারবেন না। আপনাদের স্বার্থে, আওয়ামী লীগের স্বার্থে বলছি, সংখ্যালঘু স্বার্থকে আলাদা করে দেখবেন না।’


‘অব্যাহত শিক্ষক নির্যাতন, নিপীড়ন ও হত্যার প্রতিবাদে’ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে এসব কথা বলেন শাহরিয়ার কবির। শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশ থেকে শাহরিয়ার কবির ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, মৌলবাদীরা এতটাই সাহসী হয়েছে যে তারা পোশাক, সংস্কৃতি, পয়লা বৈশাখ, শিক্ষানীতি, পাঠ্যসূচি সব বিষয়ে এখন প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। সামনে নির্বাচন, রাষ্ট্র এখন কিছুই করবে না। কয়েকজন বুদ্ধিজীবীর ভোটের চেয়ে হেফাজতের ভোট তাদের (ক্ষমতাসীন দল) কাছে গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা করার চেয়ে তারা বরং ঋণখেলাপি, করখেলাপি এবং টাকা পাচারকারীদের ওপর নির্ভর করছে।

শুধু রাস্তাঘাট বানালেই চলবে না উল্লেখ করে মুন্সীগঞ্জের নির্যাতিত শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘মানুষ মরে যাবে, কিন্তু মনুষ্যত্ব যদি মরে যায়, জাতি হিসেবে আমরা টিকতে পারব না।’

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উদীচীর সভাপতি বদিউর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব অর্জন ক্রমশ বিসর্জন দেওয়া হচ্ছে। ক্রমশ পেছনের দিকে যাচ্ছে দেশ। এখন যেসব ঘটনা ঘটছে, তা কল্পনারও অতীত। অনাসৃষ্টি ঘটানো হচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

উদীচীর পাশাপাশি মহিলা পরিষদ, খেলাঘর, প্রজন্ম ৭১, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। সমাবেশে বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে গান ও আবৃত্তি শোনান উদীচীর শিল্পীরা।