হজম

খাওয়ার জন্য আমরা বাঁচি না, বাঁচার জন্য খাই

খাবার কীভাবে হজম হচ্ছে, সেইটা তো বোঝা চাই!

হজম বোঝো তো? হজমকে কেউ পরিপাক বলে থাকে

হজম হচ্ছে সরল বানানো জটিল খাবারটাকে।

জটিলের থেকে সরল বানানো এনজাইমের কাজ

খাবার কীভাবে হজম হচ্ছে শিখে ফেলি চলো আজ।

মা যখন বলে, অনেক চিবাও কুঁচকিয়ে ফেলো ভুরু

কারণ, জানো না মুখগহ্বরে হজমের হয় শুরু।

খাবার চিবালে মুখে বের হয় লালাগ্রন্থির লালা

এরপর সেই লালায় খাবার পিছলা করার পালা।

লালার মধ্যে এনজাইম থাকে। ওরা ভাঙে শর্করা

তাই বলি শোনো চিবানোটা নয় শুধু শুধু মুখ নড়া।

চিবানোর পরে মুখের খাবার খাদ্যনালিতে যায়

পাকস্থলীটা মগজের দেয়া শুভ সংবাদ পায়।

‘খাবার আসছে, খাবার আসছে’ মগজ আওয়াজ তোলে

কলবেলের শব্দ শুনলে দরজা যেমন খোলে...

দরজাটা খুলে ভেতরে খাবার ঢোকায় পাকস্থলী

খাবারকে বলে ‘সুস্বাগতম’, আমরা যেমন বলি।

পাকস্থলীটা হজমি এসিড বের করে দিতে থাকে

মাংসপেশিরা এসিডের সাথে মেশায় খাবারটাকে।

শর্করা নয়, খাবারের আমিষ ভাঙা হয় এইখানে

খাবারের ঢেলা এরপর ছোটে ক্ষুদ্র অন্ত্রপানে।

ক্ষুদ্র অন্ত্রে খাবারটা গেলে নানান হজমি রস

এসে যোগ হয়। আমরা যেমন খাবারে মেশাই সস।

খাবার হজম করার জন্য রস প্রয়োজন হয়

এনজাইমসহ রসের চালান পাঠায় অগ্ন্যাশয়।

আমিষ, চর্বি, শর্করা ভাঙে অগ্ন্যাশয়ের রস

হজম করার যোগ্যতাটায় দশে পাবে পুরো দশ।

পিত্তথলির পিত্তরা আসে, যেটা থাকে যকৃতে

পিত্তকে লাগে খাবারের থাকা চর্বিকে ভেঙে দিতে।

অগ্ন্যাশয় ও পিত্তথলির রসের সহকারে

ক্ষুদ্রান্ত্রের হজমি রসেরা হজমকর্ম সারে।

নানা ধরনের এনজাইম দিয়ে খাদ্য হজম শেষে

ভিটামিন বা গ্লুকোজ, লবণ রক্তের সাথে মেশে।

তারপর ওরা যকৃতে যায়, শক্তি তৈরি হয়

প্রতিদিন সেই শক্তি আমরা কাজ করে করি ক্ষয়।

হজমের শেষে অবশিষ্টটা বৃহত্ অন্ত্রে যায়

বৃহত্ অন্ত্র নিজ কাঁধে নেয় বাকি কর্মের দায়।

পানি শুষে নিয়ে বৃহত্ অন্ত্র ওটাকে বানায় মল

সকালবেলায় সেই মল বলে ‘টয়লেটে যাই চল’।

কত বিস্ময় রয়ে গেছে ভাই মানবজাতির পেটে

সময় পাও তো আরও জেনে নিয়ো বিজ্ঞান বই ঘেঁটে।

হজমের কথা শুনতে শুনতে তোমার পেয়েছে খিদে?

এক্ষুনি কিছু মুখে পুরে দাও, নেই কোনো অসুবিধে।