যাদের নাম বন্ধু

যে আমাদের ঘরে প্রবেশ করতে পারে। যে আমার পরিবারের খোঁজ নিয়েছে। যে আমার পরিবারের সদস্যদের আপন করে নিয়েছে। যে আমার মাকে মা বলে ডেকেছে। যে আমার দুঃখের ভাগীদার হয়েছে। আনন্দে যে আমার পাশে দাঁড়িয়ে আমার আনন্দকে বাড়িয়ে দিয়েছে। যে আমার খোঁজখবর নিয়েছে আপনজনের মতো। সে-ই তো বন্ধু।

যাকে আমার পরিবারের লোকজন সাদরে গ্রহণ করে। যাকে আমার মা-বাবা সন্তানের মতো বুকে টেনে নেয়। যার জন্য সব সময় দরজা খোলা থাকে। সে-ই তো বন্ধু।

বিপদে-আপদে যাকে ডাকতে হয় না। যে নিজে নিজেই এসে হাজির হয়, সে-ই তো বন্ধু।—এ রকম কথা কোথায় যেন পড়েছিলাম। আজ বন্ধু দিবসে সেসব কথা মনে পড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ছে বন্ধুদের।

প্রথম আলো বন্ধুসভা বন্ধুত্বের জায়গায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বন্ধুত্বের সংজ্ঞায়ও নতুন অর্থ যোগ করেছে। সংজ্ঞাটা আরও ভারী করে তুলেছে। জেলায় জেলায় আমাদের বন্ধু। সারা দেশে বন্ধুরা ছড়িয়ে আছেন। তাঁরা এক রকম করে ভাবেন। তাঁরা একসঙ্গে দাঁড়ান। দেশজুড়ে একই সময়ে একই কাজ করেন। একই লক্ষ্যে অগ্রসর হন। এমন কথা আমাদের কোনো এক বন্ধু বলেছেন। আজ তাঁর কথা ভীষণভাবে মনে পড়ছে।

ফেসবুকে বন্ধুদের খনি। সেখানে হাজার হাজার বন্ধু। সেখানে মাঝেমধ্যে ভুশ করে জেগে ওঠে পুরোনো বন্ধু। বাল্যবন্ধু। তখন কত যে ভালো লাগে। তখন ফেসবুককে বলি, তুমি আমার হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে ফেরত দিয়েছ, হে ফেসবুক। এমন কথা সেদিন বলেছে আমার বন্ধু ইকবাল। আজ এই দিনে তার কথা বেশ মনে পড়ছে।

‘এত বন্ধু দিয়ে আমি কী করব।’ হায়, বলে কী! শত শত ফুল দিয়ে আমরা কী করি! মালা গাঁথি। আমরা হাজার বন্ধু নিয়ে এক সুতোয় মালা গেঁথেছি। সেই মালায় প্রবাহিত হচ্ছে একই সুর। একই ধ্বনি। একই চেতনাপ্রবাহ। কোনো জেলা আর অচেনা মনে হয় না। যেখানেই যাই, বন্ধুদের পেয়ে যাই। তাদের খুঁজতে হয় না। কোত্থেকে মুহূর্তে জড়ো হয়ে যায়। এমন কথা তো আজ অনেকেরই মুখে। তাদের মুখ আজ মনে পড়ছে।

দোস্ত, কী খবর বল? বন্ধু কেমন আছিস? এমন উচ্চারণ আর কে করতে পারে। পেছন থেকে ডাক দিলেও আমরা ঘুরে দাঁড়াই। তাকে বুকে টেনে নিই। ‘আরে, কেমন আছিস? কত দিন পর দেখা!’ এমন দেখায় আমরা ফিরে যাই পুরোনো দিনে। আমাদের দুচোখ ভরে ওঠে উজ্জ্বল স্মৃতি। এক বন্ধু স্মৃতির জলে ভাসতে ভাসতে বলে, ‘সে কি ভোলা যায়?’

বন্ধুরা বিরাট-বিশাল বন্ধন তৈরি করেছে সারা দেশে। সেটা দেশ থেকে উপচে পড়েছে বিদেশেও। ‘এত বন্ধু দিয়া আমি কী করিব?—চল, দেশটাকে নতুন করিয়া গড়িয়া লই।’

 লেখক: সভাপতি, প্রথম আলো বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদ