বন্ধুসভা, জীবনের পাঠশালা

মাথা উঁচু করে, মাথা উঁচু করা শিখিয়ে আজ বন্ধুসভা ২০ বছরে। বয়সের সংখ্যায় ২০ বছরের বন্ধুসভা এখন অনেক বড়। এই বড় সবদিক দিয়ে—এ দেশে বড় কোনো সংগঠনের নাম বললে বন্ধুসভার নাম যে থাকতেই হবে। গর্ব করি এই সংগঠন নিয়ে। এক দশকের বেশি সময় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছি এই সংগঠনের সঙ্গে। রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে এই সংগঠনটি। বন্ধুসভা নামটি শুনলেই এত আপন লাগে। এত নিজের লাগে।
এই বন্ধুসভা এ দেশে বিস্ময় ছড়াচ্ছে ২০টি বছর ধরে। একটি পাঠক সংগঠন হয়ে এ দেশে আর কেউ এমনটি দেখাতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবেন বলে আমার ভাবনায় খেলে না। সারা দেশে ছড়িয়ে আছে বন্ধুসভার অসংখ্য বন্ধু এবং সেই বন্ধুগুলো যে কাজ করে দেখান, সেগুলো মানুষকে শুধু অবাক করে না, মুগ্ধও করে। ভালোবাসায় সিক্ত এই সংগঠনটির বন্ধুরা সেটা দেখিয়ে দিচ্ছেন অবিরত। বন্ধুসভা একটি আলোর বাতিঘর, এই ঘরে প্রবেশের পর বই পড়ার অভ্যাস নেই যাঁদের, তাঁরাও বই পড়েন, মানুষের পাশে দাঁড়ান। বিস্ময় সৃষ্টি করেন সারা দেশে হাজারো গাছ লাগিয়ে। বাচ্চাদের নতুন জামা দিয়ে। বন্ধুসভার সঙ্গে যিনি একবার মনেপ্রাণে জড়িয়ে গেছেন, তিনি আর কখনো জীবনের পথ হারাবেন না
বন্ধুসভার বন্ধুরা গান করে, কবিতা আবৃত্তি করে, নৃত্য করে। নানান দিবস পালন করে। নিয়মের বৃত্তের মধ্যে বন্দী নয় এই সংগঠন, বন্ধুরা যেমন সামাজিক কাজ করে, তেমনি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও করে। মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলে। ভুল পথে হেঁটে যাওয়া তরুণকে সঠিক পথ দেখায় এই বন্ধুসভা।
সারা দেশের হাজার বন্ধু যখন দুই বছর পরপর বন্ধু সমাবেশে জড়ো হন, তখন বোঝা যায় বন্ধুসভার বন্ধুরা যে অন্যদের চেয়ে আলাদা। যে বন্ধু সমাবেশে ছেলেবন্ধু মেয়েবন্ধু মিলে দুই বা তিন দিন কাটায়, সেই সমাবেশ স্বপ্নের চেয়েও সুন্দর হয়, প্রয়োজন হয় না কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। বন্ধুসভার বন্ধুদের কাছে সবার আগে মানুষ সত্য, মানুষ মানুষের জন্য। বন্ধুরা মানুষের পাশে থাকেন, কাছে থাকেন, মানুষ হয়ে জন্ম নেওয়াটাকে সার্থক করেন বন্ধুসভার মাধ্যমে দেশ ও সমাজের কাজ করে।
এই সংগঠনের ২০তম জন্মদিন। এমন সংগঠন সহস্র বছর ঠিকে থাকুক তার আদর্শে, মাথা উঁচু করে, কর্মে, গৌরবে। দেশের একেকটি বন্ধুসভা এত এত ভালো কাজ করে যাচ্ছে যে সেগুলো দেখে অন্যরাও সাহস পাচ্ছে।
সাবেক সভাপতি ও বর্তমান উপদেষ্টা, মৌলভীবাজার বন্ধুসভা