বধ্যভূমিতে একদিন

মুক্তির জন্য যে যুদ্ধ একদিন শুরু হয়েছিল, তা আজ ইতিহাসে পরিণত হয়েছে। সময়ের পরিবর্তন, আধুনিকায়ন যতই খরগোশগতিতে অগ্রসর হোক না কেন—মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, আত্মত্যাগ, রক্তের ধারা, বুলেটবিদ্ধ শরীর, মাতৃহৃদয়ের হাহাকার, ধর্ষিতার চিৎকার আর বধূর অপেক্ষা যা সাদা থান উপহার দিয়েছিল—এর কোনোটাই আমরা অস্বীকার করতে পারি না।

প্রতিটা শব্দের কতগুলো অর্থ আজও আমাদের নিউরনকে উজ্জীবিত করে। হ্যাঁ, আমরা সেই প্রজন্ম, যারা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে পারিনি। তবে আজ সেই স্বাধীনতার মান রক্ষা করার জন্য কিঞ্চিৎ চেষ্টা করছি বৈকি! ৭ ডিসেম্বর, গোপালগঞ্জ মুক্ত দিবস। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে প্রিয় মাতৃভূমির একটি অংশ—গোপালগঞ্জ মুক্ত হয়েছিল। নিথর রক্তাক্ত দেহগুলো পড়ে ছিল ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। এই ক্যান্টনমেন্ট বর্তমানে একাত্তরের বধ্যভূমি—জয়বাংলা পুকুর (উপজেলা পরিষদ চত্বর) হিসেবে পরিচিত। যেসব শহীদের দেহ শনাক্তকরণ সম্ভব হয়েছে, তাঁদের কবরে পরিচিতি ফলক দেওয়া হয়েছে ।

আজ স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছর পরে এসে মনে হয়, সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা, আঠারো বছর বয়সের দেহকে খুবলে খেয়েছিল পাকিস্তানি শকুন সম্প্রদায়। কিন্তু সেই ক্ষত আর মৃতদেহ নিয়ে, আঠারো বছর বয়সের মাথা আজও ঠিকই সমুন্নত রয়েছে। গোপালগঞ্জ বন্ধুসভার পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আমরা গিয়েছিলাম একাত্তরের বধ্যভূমিতে।

প্রথম আলো বন্ধুসভা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ।