আমরা তোমাদের ভুলব না

গেরিলা যোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে চট্টগ্রামসভার বন্ধুরা।
গেরিলা যোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে চট্টগ্রামসভার বন্ধুরা।


মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানীর কথায় যুদ্ধদিনের স্মৃতি। পিনপতন নীরবতায় সেই স্মৃতিকথা শুনছেন বন্ধুরা। এ চিত্র গত ১৪ ডিসেম্বর বিকেলে অনুষ্ঠিত ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’ শিরোনামের আয়োজনের। শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে চট্টগ্রাম বন্ধুসভা। এতে উপস্থিত ছিলেন একাত্তরের গেরিলা যোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান।

প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে শুরু হয় মূল আয়োজন। ছিল বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন। এরপর স্মৃতির ডালি খুলে বসেন ডা. মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘১৯৫২ সালে বাঙালি যখন ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছিল, তখনো চিন্তা করেনি বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন, সার্বভৌম রাষ্ট্র হবে। কিন্তু ১৯৭০–এ নিবার্চনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ের পর যখন শাসনভার বুঝিয়ে দেয়নি, তখন বাঙালি বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এরপর নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। ১৯৭১ সালে ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর বাঙালি যখন স্বাধীনতা অর্জন করতে যাচ্ছে, ঠিক তখনই বাঙালিকে মেধাশূন্য জাতিতে পরিণত করতে বর্বর নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ করতে তৈরি হয়েছিল নীলনকশা। ধরে নিয়ে হত্যা করা হয় বুদ্ধিজীবীদের।’

১৯৭১ সালে ডা. মাহফুজুর রহমান ছিলেন চট্টগ্রামের একটি গেরিলা দলের কমান্ডার। তিনি তখনকার সম্মুখ সমরের গল্পও শোনান বন্ধুদের। তিনি বলেন, ‘সে সময় চট্টগ্রাম ছিল একটি গলির মতো। অল্প কয়েকটি ভবন ছিল। সবচেয়ে বড় কথা এই শহরের মানুষগুলো পাশে ছিল। আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। খেতে দিয়েছে। এই মানুষগুলো পাশে না থাকলে হয়তো এত তাড়াতাড়ি বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না।’ তিনি বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধ করেছি স্বাধীন, অসাম্প্রদায়িক একটি বাংলাদেশের জন্য। কত যোদ্ধা তিনি দেখেছেন, নিজের শরীরের সঙ্গে বোমা লাগিয়ে জয় বাংলা বলে শত্রুর ঘাঁটিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।