'মা' আড্ডায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা

‘মা’ আড্ডায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা
‘মা’ আড্ডায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা


রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা আয়োজন করে ‘মা’ আড্ডার। বিকেলে শহীদ মিনারের সামনে আসর বসে আলোচনার। পরিচয় পর্ব দিয়ে আলোচনা শুরু হয় এবং প্রত্যেক বন্ধু তাঁদের মাকে নিয়ে বিশেষ আলোচনা করেন।

পৃথিবীর মব মায়ের ওপর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আমিনুর ইসলাম বলেন, মা দিবসে সব মা–ই অনেক ভালো থাকুক।

আশিকুর রহমান, মাকে নিয়ে একটু গল্প দিয়ে আলোচনা শেষ করেন। যুদ্ধের পর তাঁর ছেলে খাবারের অভাবে মারা যাওয়ায় সেই মা ১৪ বছর ভাত খাননি। তিনি বলেন, হাজারো মায়ের মধ্যে আমার মা শ্রেষ্ঠ। সন্তান সব মায়ের কাছেই সেরা কিন্তু কেন জানি আমাকে আমার মা বেশিই ভালোবাসেন।

রাতুল কুমার বর্মণ, তাঁর মাকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন। তাঁর অভ্যাসগুলো তাঁর মায়ের থেকেই রপ্ত করা। খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠা, গানের প্র্যাকটিস, হারমোনিয়ামে তাল মেলানো—সব তাঁর মা–ই প্রধান শিক্ষকের ভূমিকা পালন করেন।

আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, আমার মা আমি যখন অনেক ছোট, তখন থেকেই অসুস্থ। তাই বাড়ি থেমে আমার মনকে এমনভাবেই সেটআপ দেওয়া হয়েছে যে যেকোনো সময় তোমার মা পৃথিবী থেকে চলে যেতে পারে। সুতরাং তোমার মনকে শক্ত করো। তিনি আরও বলেন, যদিও আমার মা তেমন হাঁটাচলা করতে পারের না, তবুও বাড়ি থেকে ক্যাম্পাসে আসার সময় তিনিই বাড়ি থেকে রাস্তা পর্যন্ত আসেন এবং যতক্ষণ পর্যন্ত আমাকে দেখা যায় গাড়িতে ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন। মো. সুরুজ বলেন, কী আর বলব মাকে নিয়ে। তিনি পুরো দিশেহারা হয়ে যান মায়ের স্মৃতিচারণা করতে করতে।

গোপাল রায়ের মা সুমিত্রা। গোপাল বলেন, ইন্ডিয়া থেকে আসা পাথর  ভাঙার কাজ করতেন তাঁর মা। একবার আমার ভাইরাস জ্বর হয়। তিনি সব কাজ বাদ দিয়ে আমার সেবায় মত্ত ছিলেন। কোনো প্রকার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও তিনিই আমার প্রথম শিক্ষক। ছোট থেকেই তিনি আমার পড়ার তাগিদ দিতেন, এখনো ফোন করলে আগে পড়াশোনা কেমন চলছে এটাই শুনতে চান।

হাসিবুর হাসান মাকে নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, আমার মা হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও ক্লান্ত হন না। আমার মায়ের ফোক গান করার শখ প্রথম থেকেই। এখনো আমি বাড়ি গেলে ফোক গানগুলো শোনান। এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন মাহিন হোসেন, লামিয়া আক্তার, আবিদ হাসান, মেহেদী হাসান, তারিফ হাসান মেহেদী, জুবায়ের হোসেন।

সেরা তিন আলোচককে পুরস্কার প্রদান করার ঘোষণা থাকায় বিচারকের ভূমিকা পালন করেন মো. আলাউদ্দীন ও তারিফ হাসান মেহেদী এবং সঞ্চালনা করেন বন্ধুসভার সাধারণ সম্পাদক খালিদ হাসান। পুরো অনুষ্ঠানটি ক্যামেরাবন্দী করেন সাহিত্য সম্পাদক ইমরান আজিম।

কিছুদিন পরেই যেহেতু ইদ সেহেতু বন্ধুরা ‘একটি করে নতুন জামা’ বিতরণ নিয়ে আলোচনা করেন মা আড্ডা শেষে। বর্তমান সভাপতি মাজহারুল ইসলামসহ সবাই  সিদ্ধান্ত নেন যে ক্যাম্পাস ছুটি হয়ে যাওয়ায় ১৭ তারিখেই নতুন জামা বিতরণ করা হবে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে।

সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভা