প্রতিবছর ঈদের আগেই ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নিতে এই উৎসবে মেতে ওঠেন সারা দেশের বন্ধুসভার বন্ধুরা।
এবার আমাদের বন্ধুদের ভাবনায় ছিল শহর থেকে দূরে কোথাও অসহায় শিশুরা। সেই ভাবনা মাথায় রেখে আমাদের এক বন্ধু শাতিল বলেন, ‘আমরা কোনো নদীভাঙন এলাকায় যেতে পারি। বন্ধুদের সহযোগিতায়ই খুঁজে পেলাম ধলেশ্বরী নদীর পাশের গ্রাম সুবর্ণতলি চর। এটি শহর থেকে সাত-আট কিলোমিটার দূরে।
জামা বিতরণের তারিখ ঠিক করে আমরা পাঁচজন বন্ধু চলে গেলাম সেই গ্রামে অসহায় শিশুদের খুঁজতে। নামের তালিকা করতে গিয়ে এমন অনেক শিশুকে খুঁজে পেলাম, যারা গত বছর ঈদ পার করছে পুরোনো জামাতেই। অনেকেই আবার স্কুল শেষে কাজ করে কোনো দোকানে। এমন ৮০টি শিশুর নাম নিয়ে আসি আমরা।’
পরের দিন কেনাকাটা শুরু। কেনাকাটায় ছিলেন ইমু, রুপা, শাতিল, তানভির, ইফতি, নাসিম, শুভ্র। কেনাকাটাসহ সব প্রস্তুতি শেষ। পরের দিন ৩০ তারিখ সকালেই সেই স্বপ্নপূরণের দিন। ছুটে চলছে গাড়ি আর কিছু তরুণের ভালোবাসার নতুন জামা। যা বন্ধুদের হাতখরচ, ঈদের জামা কেনার টাকা থেকে বাঁচানো টাকায় কেনা নতুন জামা। অবশেষে ১৮ জন বন্ধু গিয়ে পৌঁছলাম সেই জায়গায়। গিয়ে দেখি সুবর্ণতলি প্রাইমারি স্কুলমাঠে এই রোদ উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে আছে নতুন জামার স্বপ্ন দেখা শিশুরা, সঙ্গে তাদের মা-বাবারাও। বন্ধুরা মিলে সবাইকে পরিয়ে দেন নতুন জামা।
বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন টাঙ্গাইল বন্ধুসভার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসিম তালুকদার, রুপা আক্তার, সাহিত্য সম্পাদক শাওন, প্রচার সম্পাদক তানভির, অনুষ্ঠান সম্পাদক রিফাত, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক জিল্লুর, পাঠাগার সম্পাদক ওলি, পরিবেশ সম্পাদক সিনথিয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ওবায়দুল, দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ইমু, সাবেক সভাপতি অজয় ও সাধারণ সম্পাদক শুভ্র দে সরকারসহ আরও বন্ধুরা। নতুন জামা পেয়ে শিশুদের মুখের সেই হাসি দেখেই বন্ধুরা বলে ওঠেন, যা কিছু ভালো, তার সাথে প্রথম আলো।
সাধারণ সম্পাদক, টাঙ্গাইল বন্ধুসভা