রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সভার 'শেষের কবিতা'

পাঠচক্রে বন্ধুরা।
পাঠচক্রে বন্ধুরা।


‘ফ্যাশনটা হরো মুখোশ, স্টাইলটা হলো মুখশ্রী’—এ ফ্যাশন আর স্টাইলের ভেতর আমরা কোনটা বেছে নেব? ‘হিরের পাথরটাকে বলে বিদ্যা। আর হিরের পাথর থেকে আলো ঠিকরে পড়াটাকে বলে কালচার। পাথরের ভার আছে আর আলোর আছে দীপ্তি’ আমাদের জীবনে কোনটা বেশি গুরুত্ব? ভার নাকি দীপ্তি?
প্রেম যেমন দুই প্রকার, দিঘির জল ও কলসের জল।
দিঘির জলকে ঘরে তোলা যায় না। তবে মন খুলে সাঁতার দেওয়া যায় আর কলসের জল যখন ইচ্ছে তখন ঘরে তোলা যায়। প্রতিদিন নানা কাজে ব্যবহারও করা যায়।
বন্ধুদের ভেতর কোন জল বেশি অনুশোচনীয় দিঘির নাকি পাত্রের?
এমন সব কঠিন হৃদয় আকর্ষণীয় প্রশ্ন-উত্তর বেড়াজালের ভেতর দিয়ে চলে ১৫ অক্টোবর মঙ্গলবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার পাঠচক্র।
পাঠচক্রের বিষয় ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাস।
পাঠচক্র সঞ্চালনা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধুসভার পাঠচক্র সম্পাদক শাদমান সাকিব নিলয়। উপস্থিত সদস্যরা শেষের কবিতা বই পড়ার অভিজ্ঞতা, ভালো লাগা, প্রেরণা, সাড়া জাগানো মমত্ববোধের বিষয়গুলো তাঁদের বক্তব্যে তুলে ধরেন। বিষয়বস্তুর মধ্যে বিশ্লেষণের মাধ্যমে বোঝা যায় অমিত রায় প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত ও রোমান্টিক যুবক। তর্কে প্রতিপক্ষকে হারাতে পক্ব। অমিত একবার শিলং পাহাড়ে যান বেড়াতে। সেখানেই পরিচয় ঘটে লাবণ্যর সঙ্গে। যার পরিণতি গড়াল প্রেমে। কিন্তু অচিরেই লাবণ্য বুঝতে পারে অমিত অতিশয় রোমান্টিক, যার সঙ্গে প্রতিদিনের সাংসারিক হিসাব-নিকাশ চলে না। এদিকে ইতিমধ্যে শিলংয়ে হাজির হয় কেটি। হাতে অমিতের দেওয়া আংটি দেখে তাকে নিজের বলে দাবি করে সে। ভেঙে যায় লাবণ্য-অমিতর বিবাহ-আয়োজন। শেষ পর্যন্ত অমিত স্বীকার করে, লাবণ্যের সঙ্গে তার প্রেম যেন দিঘির জল, সে জল ঘরে নিজের আয়ত্তে আনবার নয়, সেই জলে মন তার সাঁতার দেবে। আর কেতকীর সঙ্গে সম্পর্ক ঘড়ায় তোলা জল—প্রতিদিন তুলবে, প্রতিদিন ব্যবহার করবে। যার মন যেখানে টানে সে প্রকৃতির টানে সেখানেই যাবে, এটাই ঘুরেফিরে বন্ধুদের কথায় উঠে আসে বেশির ভাগ সময়।
আলোচকের মধ্যে বিচারকেরা দুজনকে শ্রেষ্ঠ আলোচক হিসেবে ঘোষণা দেন। প্রথম হয়েছেন গোপাল রায় ও দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন নয়ন চন্দ্র দাস।
পাঠচক্রে উপস্থিত ছিলেন যুবাইর আহমেদ, নয়ন চন্দ্র দাস, বিনীতা বিশ্বাস, মো. সুরুজ সর্দার, তৌফিক হাসান, মো. মামুন আলী, শুভ শিকদার, নাঈম ইসফার সিরাত, মো. ওবায়দুদ রহমান, মো. সোহান জোয়ার্দার, আশিকুর রহমান আশিক, মিথিলা বিনতে মতিন, মো শরিফুল ইসলাম, মো. সিফাত হোসেন, ইসরাত সিরাত, শুভ শিকদার, জানজিন এহসান, তৌফিক হাসান এলাহী, আল আমিন, আনিক আহমেদ, শওকত আলী, সোহান, রোহান।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক ফারজানা সুলতানা, দপ্তর সম্পাদক জুবাইর আহমেদ চৌধুরী, উপসাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলাউদ্দীন, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক তারিফ হাসান মেহেদী, ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক রুবেল আহমেদ, সাহিত্যবিষয়ক সম্পাদক ইমরান আজিম, প্রচার সম্পাদক মো. রাসেল, অর্থসম্পাদক জেনুউইন চাকমা, যোগাযোগ সম্পাদক তাসনিম হোসেন, পাঠচক্র সম্পাদক শাদমান সাকিব নিলয়, সাধারণ সম্পাদক খালিদ হাসান, সভাপতি মাজহারুল ইসলাম রকি।
পাঠচক্র শেষে সাংগঠনিক আলোচনা হয়। আলোচনায় বিতর্ক প্রতিযোগিতা, প্রথম আলোর জন্মদিন পালন এবং জাতীয় বন্ধু সম্মেলনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

সভাপতি