তারুণ্যে ভরা বাগেরহাট বন্ধুসভা

৩ নভেম্বর রোববার বাগেরহাট বন্ধুসভার সাংগঠনিক বৈঠক শেষে বন্ধুরা।
৩ নভেম্বর রোববার বাগেরহাট বন্ধুসভার সাংগঠনিক বৈঠক শেষে বন্ধুরা।


বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের পক্ষে মাদারীপুর বন্ধুসভার সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠকের পর রওনা হই বাগেরহাট বন্ধুসভার উদ্দেশে। গোপালগঞ্জ পর্যন্ত যেতেই ফোনে কল আসে বাগেরহাট বন্ধুসভার সহসভাপতি তানিম আহমেদের—ভাই, কত দূর আছেন? কিছুক্ষণ পরে আবার কল করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসিবুর রহমান—ভাই, আর কত দূর? আমরা আপনার অপেক্ষায় আছি। ৩ নভেম্বর যখন বাগেরহাটে পৌঁছাই, তখন বেলা একটা। বাসস্ট্যান্ডে নেমে দেখি, বন্ধুরা আমার জন্য অপেক্ষা করছেন।

বাগেরহাট সদরে পৌঁছার কিছুক্ষণ আগেই চোখে পড়ে ঐতিহাসিক ষাটগম্বুজ মসজিদ। আবার কিছুদূর যেতেই দেখি হজরত খানজাহান আলীর দরগা। দুটিই বাগেরহাট সদরের খুব কাছে। বৈঠকের আগে যথেষ্ট সময় আছে, তাই সুযোগ হাতছাড়া করলাম না। বন্ধুদের ইচ্ছার কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে নিয়ে রওনা হলেন। অন্য কিছু বন্ধুও যোগ দেন আমাদের সঙ্গে।

দুটি জায়গা দেখে ফিরে এলাম। তখন বেলা সোয়া তিনটা বাজে। সরাসরি চলে গেলাম প্রথম আলো বন্ধুসভা বাগেরহাট অফিসে। সেখানে আমার সঙ্গে বেলা সাড়ে তিনটায় সাংগঠনিক সভা।
বন্ধুদের অফিস রুমে ঢুকতেই একঝাঁক তরুণ বন্ধু স্বাগত জানান। ৩ নভেম্বর রোববার বাগেরহাট বন্ধুসভার সঙ্গে সাংগঠনিক সভায় বসি। বাগেরহাট বন্ধুসভার নতুন-পুরোনো ১৫ জন বন্ধু সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বন্ধুসভার বিভিন্ন সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বন্ধুরা প্রত্যেকের দায়িত্ব এবং আগামী দিনের পরিকল্পনাসমূহ উপস্থাপন করেন। বাগেরহাট বন্ধুসভার সহসভাপতি তানিম আহমেদ বন্ধুদের বই পড়া এবং লেখালেখির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, ‘বই পড়া চর্চার মাধ্যমে আমরা আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারি।’সাধারণ সম্পাদক শেখ হাসিবুর রহমান বিগত এক বছরের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন। প্রতি মাসে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোনার আসরের কথা জানালেন উপসাংগঠনিক সম্পাদক তৌফিক হারুন। প্রচার সম্পাদক আশফাক শাহরিয়ার বলেন, বিভিন্ন স্কুল-কলেজে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করবেন, যার মাধ্যমে নতুন বন্ধু সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। বন্ধুরা তাঁদের বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েও আলোচনা করেন। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বৃক্ষরোপণ, অসহায় বয়স্কদের সহায়তা করা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, দরিদ্র মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের সহায়তা প্রদান, স্বাস্থ্যসচেতনতা তৈরি। মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন জানালেন রাস্তায় চলাচলকারী বিভিন্ন গাড়িচালকদের সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রচারণা চালানোর বিষয়ে। পরিবেশ সম্পাদক তনয় সাহা আগামী মাসে বন্ধুদের নিয়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করবেন বলে জানান। বন্ধুরা আগামী জাতীয় বন্ধু সমাবেশের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা করেন।

বন্ধুরা দাবি জানান, ঢাকা থেকে যেন তাঁদেরকে আরও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়। বন্ধুসভা জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের পক্ষ থেকে বন্ধুদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হয়। সভায় উপস্থিত নতুন বন্ধুদের বন্ধুসভার উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে জানানো হয়। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৌরভ হালদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ হোসাইন হায়দার, যোগাযোগ সম্পাদক মো. মিনহাজুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক সাইদা ইসলাম সেতু, পাঠাগার সম্পাদক মো. আলী, সদস্য মিম, সোহাগ, সাগর, প্রিয়াংকা, জয় প্রমুখ।

প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা সভা চলার পরেও বন্ধুদের আলোচনা চলছিল। চারদিকে রাতের অন্ধকার নেমেছে। তবু বন্ধুরা কেউই যেতে চাইছেন না। কীভাবে নিজেদের আরও দক্ষ, বন্ধুসভাকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তোলা যায়, সেই দৃঢ়সংকল্প বন্ধুদের। বাগেরহাট বন্ধুসভার তরুণ বন্ধুদের মুখে দেখেছি যেন এক একটা আগামীর বাংলাদেশ।