ইন্দোনেশিয়ায় মৌলভীবাজারের বন্ধু

ইন্দোনেশিয়ায় মৌলভীবাজারের বন্ধু
ইন্দোনেশিয়ায় মৌলভীবাজারের বন্ধু


ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ছায়া জাতিসংঘের সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন মৌলভীবাজার বন্ধুসভার সভাপতি অরণ্য রনি। ১৩-১৬ নভেম্বর চার দিনের এই সম্মেলনে রনিসহ অংশ নেন ২৭ জন বাংলাদেশি। বৈশ্বিক এ সম্মেলনে রনি ছিলেন সিলেট বিভাগ থেকে নির্বাচিত একমাত্র প্রতিনিধি।
বাংলাদেশিদের মধ্য থেকে ১১ নভেম্বর সর্বপ্রথম ইন্দোনেশিয়া পৌঁছান নাঈম উদ্দিন ও ঝর্ণা আক্তার পলি। পরের দিন ১২ নভেম্বর বালি যান মেহজাবিন মুমু, সাব্বির হাসান, মীমতাহীনা জামান, অরণ্য রনিসহ আরও কয়েকজন। সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর বালিতে পৌঁছেন মো. নাইম হাসান মুন্না, স্বর্ণা দে, মাজহারুল ইসলাম রিফাত, তানজিম আক্তার, অভি ফরায়েজীসহ অন্য প্রতিযোগিরা।

জাতিসংঘ এবং তার অধীনস্ত বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থার ২১টি কাউন্সিলের অধিবেশন নিয়ে ছিল এবারের আয়োজন। চার দিনের এ সম্মেলনের প্রথম দিনে ছিল গালা ডিনার, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, কমিটি সেশনের দিকনির্দেশনা।
দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সাময়িক বিরতি দিয়ে একটানা চলে জাতিসংঘের আদলে কমিটি সেশন। এ সেশনে প্রতিটি কাউন্সিলে একেকজন একেকটি দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। রনি নামিবিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। কাউন্সিল বা কমিটি সেশনগুলো জাতিসংঘের আদলে হুবহু পরিচালনা করা হয়।
রনি সিলেটের এমসি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষ পর্বের শিক্ষার্থী। তিনি ১০ বছর ধরে প্রথম আলো বন্ধুসভার সঙ্গে সম্পৃক্ত।

সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ অনলাইন নিউজ পোর্টাল সিলেট টুডে টোয়েন্টিফোর ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তিনি।
তৃতীয় দিন সকালে সমুদ্রসৈকত পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতায় অংশ নেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রায় দুই হাজার প্রতিনিধি। এরপর তাঁদের নিয়ে বালি শহরের উল্লেখযোগ্য স্থান ওয়াটার ব্লো নুসা দুয়া, উলুওয়াতু টেম্পল পরিদর্শন করা হয়। বিকেলের দিকে সমাপনী অনুষ্ঠান হয়।
বালিতে ছায়া জাতিসংঘের সম্মেলনে মঞ্চও মাতিয়েছেন বাংলাদেশিরা। রাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।
এ সময় বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা নানা ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নিজেদের দেশকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করেন। রনিসহ ছয় বাংলাদেশি দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে নিজেদের দেশকে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে ৬ জন এই নৃত্যে অংশ নেন। ‘ও পৃথিবী এবার এসে বাংলাদেশ নাও চিনে’ ‘আইলো আইলো রে রঙ্গে ভরা বৈশাখ আমার আইলো রে’ ঢাকাই শাড়ি ও চলো সবাই গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন নাঈম উদ্দিন, স্বর্ণা দে, অরণ্য রনি, মীমতাহিনা জামান, তানজিম আক্তার ও সাব্বির হাসান।

এ সময় ভিনদেশি দর্শকদের মধ্যে বাঁধ ভাঙা উল্লাস ছড়িয়ে যায়। বাংলা গানের তালে তালে তাঁরা মঞ্চের সামনে এসে নাচতে শুরু করেন। এ সময় বাঙালি সংস্কৃতির উদ্দীপনা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় তাঁদেরও মঞ্চে উঠে নাচতে দেখা যায়।
বাংলাদেশের ছয়জন প্রতিনিধিকে সাংস্কৃতিক পারফরম্যান্সের জন্য সম্মানসূচক সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। অন্যান্য দেশের মধ্যে পরিবেশনা ছিল মেক্সিকো, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মাদাগাস্কার, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ফিলিপিনসের প্রতিনিধিদের। এই আটটি দেশকে প্রাথমিক পর্যায়ের বাছাই থেকে চূড়ান্ত পর্বে পারফর্ম করতে দেওয়া হয়।
সবশেষে গালা ডিনার অনুষ্ঠিত হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা ভালো করেছে তাদেরকে সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। পরের দিন হোটেল চেক আউটের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এশিয়ার সর্ববৃহৎ চার দিনের ছায়া জাতিসংঘের সম্মেলন।
বিশ্বের প্রায় ৪০ হাজার প্রতিযোগিদের মধ্য থেকে বাছাই করে দুই হাজার জনকে এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য ঘোষণা করে আমন্ত্রণ জানানো হয়।