বঙ্গবন্ধুর 'স্বাধীনতা'ঘোষণা - এম এ হান্নান


২৫ মার্চ রাত ১২টার পর হানাদার বাহিনীর ভয়াবহ আক্রমণে মানুষ দিশেহারা। ওই রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পাকিস্তানি বাহিনী। তখনো পর্যন্ত কেউ জানে না, তাঁকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সময় কাটছে চরম অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে। এক ভয়াবহ নৈশব্দতায় ঘিরে আছে চারদিক। সে সময় বেতারই প্রায় একমাত্র প্রচারমাধ্যম।

ইতিমধ্যে পাকিস্তানি বাহিনী ঢাকা বেতারকেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তখনো চট্টগ্রাম মুক্ত। শত্রুরা প্রবেশ করতে পারেনি। এই সময় বেলাল মোহাম্মদসহ অনেকেই চট্টগ্রাম বেতারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। চরম উদ্বিগ্নতার মধ্যে রয়েছেন তাঁরা। হঠাৎ কলকাতা থেকে আকাশবাণীর ঘোষণা শুনতে পেলেন, পূর্ব বাংলায় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে গান, ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।’
প্রায় সবার চোখে পানি এসে গেল। তখন থেকেই তাঁরা ভাবছিলেন কীভাবে বেতারকেন্দ্র চালু করা যায়। বেলাল মোহাম্মদসহ কয়েকজন বেরিয়ে গেলেন। তখন স্টেশন রোডের কাছে ছিল আওয়ামী লীগের অফিস। তাঁরা সে অফিসে গেলেন।
বাইরে ভীষণ খারাপ অবস্থা। অনেক জায়গায় ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয়েছে। কোনো কোনো জায়গা থেকে গুলির আওয়াজ আসছে। আওয়ামী লীগের অফিস থেকে বেলাল মোহাম্মদ চলে যান আগ্রাবাদে বেতারকেন্দ্রের কন্ট্রোল রুমে। বেতারকেন্দ্র চালুর জন্য তিনি প্রকৌশলী মীর্জা নাসিরুদ্দিনের সঙ্গে কথা বলেন। নাসিরুদ্দিন বেলাল মোহাম্মদকে বলেন, দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান তাঁর কাছে এসেছিলেন। তিনি চট্টগ্রাম জেলা ট্রান্সমিটার চালু করার অনুরোধ করেন। তখন বেতার প্রকৌশলী আবদুস সোবহান, দেলওয়ার হোসেন, মোসলেম খান ও আমি ট্রান্সমিটার চালু করি। এম এ হান্নান ২৬ মার্চ দুপুরে নিজের নাম-পরিচয় দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করেন।
সাংবাদিক ও সংগঠক