ছেঁড়া পাতার গল্প


ঘুড়ির সুতো ছেঁড়া অলস বিকেলে
চিলেকোঠার দরজার সামনে
কবিতাঠাসা নীল ডায়েরির ছেঁড়া পাতাগুলি নিজেকে দক্ষিণা হাওয়ায় মেলে ধরবার প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে তাদের হাতের মুঠোয় আগলে নিলাম।

একটি বিষণ্ন বিকেলের গন্ধ আমায় ঘিরে নিল।
তোমায় নিয়ে লেখা গল্পগুলো বেশ পুরোনো হয়েছে বটে, তবে এখনো তোমার অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে।
তুমি ছিলে সাদার মাঝে অসাধারণ জীবনানন্দের বনলতার মতো।
শরদিন্দুর ব্যোমকেশ চরিত্রের সত্যবতীর মতো আমার মাঝে এসেছিলে।
আমি কোনো ধূমকেতুর বিস্ময় নিয়ে তোমার মাঝে উদয় হতে পারিনি সত্য।
কিছু দূরত্ব না হয় রয়ে যাক
কিছু স্মৃতি বয়ে যাবার সুযোগটুকু না হয় পাক।
তুমি–আমি তো বেশ আছি খোলা চিঠির খামের অস্তিত্বে।
রবি ঠাকুরের ভাষ্যমতে,
দূরে থাকার বিশাল সুখটাই তো চিঠি।
নজরুলের জীবনের কল্যাণীয়াসুর মতো আমার মাঝে তোমার আগমন।
তোমার শুভ্র ললাট ছোঁবার স্পর্ধা আজও হয়ে ওঠেনি,
তবু কী ভীষণ মায়া তোমায় নিয়ে আমার এই জীবনসংসারে।
সূর্যাস্তের সাথে সাথে কি আমিও অস্ত যাব
মনের কোনো গহিন কোণে?
মেঘগুলোও কি ভীষণ অশান্ত?
একই আকাশ, তবু আজ আমার আকাশে কী ভীষণ বৃষ্টি
আর তুমি তখন মেঘের মাঝে সূর্যের কিরণকে উপলব্ধি করছ।
তুমিও হয়তো এসেছিলে কোনো এক আড়াল খুঁজতে।
এসেছিলে তবে ভুল করে আমার মাঝে,
যা কিনা উজাড় করে দিয়েছিলাম।
বিষণ্ন বিকেলের ছিঁড়ে যাওয়া ঘুড়ির মতো তুমিও হারিয়েছ মেঘের আড়ালে
বোকা আমি নাটাই হাতে দাঁড়িয়ে থাকি বিহানবেলাতেও।

টাঙ্গাইল বন্ধুসভা