জরুরি অঙ্গ কিডনি


কিডনি দেহের ভীষণ জরুরি অঙ্গ। এই অঙ্গ সংখ্যাতে দুটি। পেটের পেছনে, কোমড়ের দিকে, দুই পাশে (বাঁ ও ডান) রয়েছে দুটি কিডনি। লম্বায় প্রায় ৪ ইঞ্চি এই অঙ্গটি দেখতে কমলালেবুর কোয়ার (বড় কমলালেবুর কোয়া) মতো। একজন পুরুষ মানুষের কিডনির থেকে, একজন মহিলার কিডনির ওজন তুলনামূলকভাবে কম।

এই অঙ্গদ্বয়ের প্রধান কাজ হলো:
১) রক্তকে পরিষ্কার করা। অর্থাৎ রক্তের রোগজীবাণু ও দেহের ক্ষতিকর তরল পদার্থকে মূত্রের সাহায্যে দেহের বাইরে বের করে দেওয়া।
২) মূত্র তৈরি করা কিডনির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
৩) রক্তের রোগজীবাণুকে রক্ত থেকে ছেঁকে মূত্রের মাধ্যমে আমাদের শরীরের বাইরে পাঠিয়ে দেয়। তাই কিডনিকে দেহের ছাঁকনি বা ছাঁকন যন্ত্রও বলা হয়।
৪) কিডনিকে বাংলায় বৃক্ক বলে। কিডনি দেহের তরল পদার্থের সাম্যাবস্থা বজায় রাখে।
৫) রক্তে ক্ষার ও লবণের সমতা বজায় রাখে।
৬) মানুষ ঘুমিয়ে থাকলেও কিডনি কাজ করতে থাকে। কিডনি প্রতিদিন একজন মানুষের গড়ে প্রায় এক থেকে দুই লিটার মূত্র তৈরি করে। প্রতিদিন তাই দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করা দরকার।
পানি ঠিকমতো পান করলে কিডনি সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে পারবে। ফলে দেহের রোগজীবাণু ঘাম ও মূত্রের সাহায্যে শরীরের বাইরে বের হবে।

কিডনির যত্নে আমাদের করণীয়:
১) বছরে অন্তত একবার পুরো দেহের পরীক্ষা করান। এতে লুকানো অসুখগুলো ধরা পড়বে।
২) অবশ্যই ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৩) যেকোনো প্রকার মাদকদ্রব্য বর্জনীয়। মাদকদ্রব্য দেহের প্রতিটি অঙ্গের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
৪) কিডনি ‘রেনিন’ নামের এক ধরনের হরমোন তৈরি করে। এই হরমোন রক্তচাপ (ব্লাডপ্রেশার) নিয়ন্ত্রণ করে। মাদক গ্রহণকারীদের ‘রেনিন’ ঠিকভাবে কাজ করে না।
৫) চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত কোনো ওষুধ দীর্ঘদিন খাবেন না।
৬) একবার জন্ডিস যাদের হয়েছে তাঁরা কিডনির প্রতি আরও মনোযোগী হবেন।
৭) কিডনিতে ইনফেকশনের সমস্যায় ভুগছেন বা কিডনিতে ডায়ালাইসিস চলছে, এমন ব্যক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত অতিরিক্ত পানি ও কোনো ওষুধ খাবেন না।
৮) কিডনি ঠিকভাবে কাজ করতে না পারলে, দেহের দূষিত তরলগুলো সঠিকভাবে দেহ থেকে বের হতে পারে না। তখন দূষিত পদার্থগুলো দেহে জমতে থাকে। বছরের পর বছর দেহের দূষিত পদার্থগুলো কিডনিতে জমে পাথর তৈরি করে। তাই নিয়মিত ২ লিটার পানি পান করবেন।
৯) সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ পাওয়া যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এসব ওষুধ খাবেন না।
১০) কোমল পানীয় ও ফাস্ট ফুড অতিরিক্ত মাত্রায় কখনোই উচিত নয়। এ ধরনের খাবার কিডনির জন্য উপকারী নয়।