বিষাদের ভালোবাসা


ভালোবাসার এই পৃথিবীতে বুড়িয়ে যেতে ইচ্ছে করে না। মনে হয় আরও বেশি বেশি ভালোবাসি; আরও বেশি বেশি মায়ায় জড়াই; আরও বেশি বেশি হাসি; আরও বেশি বেশি কাঁদি। কেউ একজন লিখেছিল, আমার মন যাতে কখনো বুড়ো না হয়। কিন্তু এখন যা অবস্থা দেখছি, মন বুড়ো হওয়ার আগেই আমিই হয়তো এই ভালোবাসার পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব। তাই চলে যাওয়ার আগে, সবার প্রতি শুধুই ভালোবাসা, শুধুই মায়া, শুধুই মমতা। হয়তোবা আজকের সন্ধ্যাটাই শেষ সন্ধ্যা, হয়তোবা এই ফুলগুলোই আমার পাওয়া শেষ উপহার বা এই বইটি, যাতে আছে মায়াবী হাতের শেষ স্পর্শ।
আবার ভাবি, একলা এই পৃথিবী দিয়ে কী করব আমি? আমার আপনাদের সবাইকে নিয়ে বাঁচতে হবে। আমি আবার ফিরে যাব প্রাণচঞ্চল ছাত্রদের মধ্যে, আবার কলরব করবে সব পাড়া-মহল্লা। আবার মুখর হয়ে উঠবে সব শিল্প-সাহিত্যচর্চাকেন্দ্র। আবার দেখব, ভোরবেলায় কোনো ‘বাবা’ তাঁর আধো ঘুমে জড়ানো বাচ্চাটাকে হাত ধরে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন। আবার ফিরবে পৃথিবী পুরোনো রূপে, ধরা দেবে মানুষে মানুষে সম্পর্কের সেই চিরচেনা ভালোবাসা। এ জন্য দরকার সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা।
নিজের চাওয়া–পাওয়াগুলোকে সীমিত করুন। হয়তোবা আপনার চাওয়ার কিছু অংশ অন্যের পাওয়ার অধিকার আছে। তাই বিলিয়ে দিতে শিখুন নিজের আনন্দকে বিষাদ আলিঙ্গনের মধ্যে।
তাই বলছি, সবাই ভালো থাকুন, সবাই ঘরে থাকুন। শেষ বলে কিছু নেই। হয়তো শুদ্ধ পৃথিবীতে আবার ফিরে আসব, আবার পড়ব মায়ার জালে, আবার থাকব আপনাদের মধ্যে সবাইকে নিয়ে সবার সঙ্গে। এ জন্য এখন দূরে আছি। দূরে থাকাই হোক আমাদের কাছে থাকার পথ। এই পথটাকে সবাই আলিঙ্গন করবেন এই আশাই ব্যক্ত করছি। শরৎচন্দ্রের ভাষায় বলতে চাই, ‘বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না, দূরেও ঠেলিয়া দেয়।’

চট্টগ্রাম বন্ধুসভা