'সব ভাইঙ্গে-চুরে গেইছিল, রান্তি পারি না, খাতি পারি না'

বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রথম আলো ট্রাস্টের খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা। সদর উপজেলার চাপাতলা গুচ্ছগ্রামে। ছবি: প্রথম আলো
বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রথম আলো ট্রাস্টের খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা। সদর উপজেলার চাপাতলা গুচ্ছগ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

বাগেরহাট সদর উপজেলায় দুর্যোগকবলিত ২০০ পরিবারকে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে খাদ্যসহায়তা হিসেবে চাল, ডাল, আলু দেওয়া হয়। গত শুক্রবার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে নদতীরের চাপাতলা গুচ্ছগ্রামের ৭০টি পরিবার ছাড়াও খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মাঝিডাঙ্গা আশ্রয়ণ ও মাঝিডাঙ্গা গ্রামে।

এসব এলাকার মানুষের চোখে–মুখে এখনো আতঙ্কের ছাপ। ঝড়ের রাতে জোয়ারে প্লাবিত চাপাতলা গুচ্ছগ্রামের আশপাশে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র বা পাকা ঘরও নেই। ফলে প্রচন্ড ঝড়–বাতাসের মধ্যে ঝুঁকি নিয়েই সারা রাত টিনের ঘরে ছিলেন সেখানকার মানুষ। ঝড়ের রাতে নদের পানির তোড়ে ভেঙে গেছে গ্রামটি যাওয়ার একটিমাত্র রাস্তা।

ওই গ্রামের সালমা বেগম বলেন, ‘এত বৃষ্টি আর বাতাস হইছে। আমাদের হাইতনে (উঠান), ঘর সব তলাই গেইছে। সব ভাইঙ্গে–চুরে গেইছিল। না খেয়ে ছিলাম। রান্তি পারি না, খাতি পারি না। আপনারা দুটে খাবার নিয়ে আইছেন। এখন আমরা কয়ডা রাইদে খাতি পারব।’

খাবারের ব্যাগটি হাতে পেয়ে কেঁদে ফেলেন আরেক নারী। তাঁর স্বামী আসলাম ভ্যান চালান। পানিতে তাঁদের ঘরের সব ভিজে যায়। রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় স্বামী ভ্যান নিয়ে যেতে পারছেন না। তাই পরিবার নিয়ে থাকতে হচ্ছে না খেয়ে। বলেন, ‘আপনারা ত্রাণ নিয়ে আইছেন। এই আল্লাহর কাছে শুকর আদায় করি।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের এই ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেন বাগরেহাট প্রথম আলো বন্ধুসভার সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আলী, রিজিয়া পারভিন, সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৌরভ হালদার, রুতব সরকার, শফিকুল ইসলাম, লিনসা, নাফিজ প্রমুখ।