বাবা আমার অহংকার

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

আমার বাবা একজন নির্মাণশ্রমিক। জন্ম থেকেই দেখেছি, ঈদের সময় বাবা নতুন জামা নিতেন না, শুধু আমাদের জন্য কিনতেন। আমরা তিন ভাই দুই বোন। আমি সবার বড়। এমসি কলেজ থেকে ইংরেজি বিষয়ে মাস্টার্স করছি। আমার ছোট বোন এমসি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করেছে। মেজ ভাই মদন মোহন কলেজে বিএ তৃতীয় বর্ষে পড়ছে, আর ছোট ভাই লিডিং ইউনিভার্সিটিতে আর্কিটেকচার নিয়ে পড়ছে। সবার ছোট বোন সপ্তম শ্রেণিতে। গৃহিণী মা সব সময় আমাদের খেয়াল রাখেন।

বাবা একজন নির্মাণশ্রমিক, মানে রাজমিস্ত্রী হয়েও আমাদের পড়াশোনার সব দায়িত্ব পালন করছেন। প্রথম আলো বন্ধুসভার কর্মসূচি হিসেবে গত তিন বছর ঈদে শিশুদের নতুন জামা উপহার দিয়েছি। তিন বছরই বাবা নিজে টাকা দিয়ে সহায়তা করেছেন। এবার করোনা মহামারির সময়ে বাবা যখন জানলেন আমার টিউশনি নেই, বাচ্চারা আমার কাছে জামা চাইছে, তখন বাবারও সব কাজ বন্ধ। ঈদের আগে কিছুদিন কাজ করেই বাবা তিনটি জামা আর পাঁচ কেজি গরুর মাংস নিয়ে এসে বলেন, ‘ওদের দাও ঈদে। তোমার নেই তো কী হলো, বাবা এখনো আছি।’

তখন নিজের চোখে জল চলে আসে, কিন্তু বাবাকে বুঝতে দিইনি। আনন্দমিশ্রিত কষ্ট লাগছিল। এত বড় হয়ে বাবার স্বপ্ন পূরণ করব কী, বাবাই আমার ও সংগঠনের স্বপ্ন পূরণ করছে।

বাবা বলেন, সংগঠন যখন সমাজের কাজ করছে, তখন তুমি তোমার সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করবে, তাহলেই দেশ ভালো থাকবে।

‘বাবা তুমি শত বছর থেকো পাশে
তোমার স্বপ্ন পূরণ করতে দিয়ো সুযোগ।
তুমি আমার অংশ ছিলে, থাকবে
তোমার সন্তান হয়ে জন্ম নিয়ে
গর্ব করি দিনে–রাতে।
বাবা তুমি আমার অহংকার,
ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি তোমায় চিরকাল।’

শাহ সিকান্দার শাকির: সিলেট বন্ধুসভা