বাবা আমার 'সূর্য'

প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

আমি গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। পড়াশোনার জন্য কয়েক বছর হলো সিলেট শহরে থাকছি। সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজে (এমসি কলেজ) গণিত নিয়ে মাস্টার্স করছি। আমার এ পর্যন্ত আসতে যাঁর অবদান সবচেয়ে বেশি, তিনি আমার বাবা।

আমি প্রায় সময়ই একটি প্রশ্নের মুখোমুখি হই। বাবা কী করেন, কিংবা বাবার পেশা সম্পর্কে জানতে চান, এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়তো কমবেশি সবাইকেই হতে হয়। কেউ যখন এমন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন, তখন খুব গর্ব করেই বলি, আমার বাবা একজন কৃষক। এটি আমার কাছে গর্বের ব্যাপার। আমি নিজেও সিলেটে আসার আগ পর্যন্ত বাবার কৃষিকাজে মাঝেমধ্যে সাহায্য-সহযোগিতা করেছি।

সূর্য পৃথিবীর সকল শক্তির উৎস। আমার বাবা হচ্ছেন আমার ‘সূর্য’। আমার সকল শক্তির উৎস। শত অন্ধকার থেকে যিনি আমাকে আগলে রাখেন। মধ্যবিত্ত পরিবার হওয়ায় খুব স্বাভাবিকভাবেই অভাব-অনটন লেগে থাকে আমাদের সংসারে। বাবার সামান্য আয়, তা-ই দিয়ে তিনি সংসারের ভরণপোষণ করেন। এ নিয়ে অবশ্য বাবার কোনো আফসোসও নেই। সব সময় আমাদের ভাইবোনদের প্রায় সব সাধ-আহ্লাদ পূরণ করার চেষ্টা করেন। নিজে কষ্ট ভোগ করেন, তবুও আমাদের সুখে-শান্তিতে রাখার চেষ্টা করেন।

আমি বাবার কাছ থেকে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে শিখেছি। আমার বাবা সুন্দর আগামীর স্বপ্ন দেখেন। তাঁর সন্তানেরা ভালো কিছু করবে সেই স্বপ্ন দেখেন। বাবার স্বপ্নগুলো যেন পূরণ করতে পারি, সেটিই আমার চাওয়া। বাবা যেমন আমার গর্বের ধন। আমিও যেন তেমনি তাঁর গর্বের ধন হতে পারি। সব সময় ভালো থাকুক আমার বাবা।

অনেকের কথা আয়োজন করে বলা হলেও বাবার কথা কখনো আয়োজন করে বলা হয় না। মা-বাবাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। অথচ তাঁদেরকে কখনো মুখ ফুটে বলা হয়নি ভালোবাসার কথা। জড়তা ভেঙে মা-বাবাকে বলা হয়নি, ‘মা-বাবা, তোমাদের ভীষণ ভালোবাসি’।

দেবাশীষ রনি: সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সিলেট বন্ধুসভা