বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল

বৃষ্টিস্নাত জুরিখের একটি রাস্তা
বৃষ্টিস্নাত জুরিখের একটি রাস্তা

বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছো দান, আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান। সুইজারল্যান্ডে কদম ফুল নেই। আর এখন যে কদম ফুলের মাস তাও প্রায় ভুলে গেছি। সে রকম বাদল দিনও নেই এখানে, নেই বাদল দিনের গানও। কিন্তু কদিনের ঝরঝর বৃষ্টি বাদল দিনের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।
ফেসবুকে ক্রমাগত আপডেট হচ্ছিল অবিরাম বৃষ্টির ছবি। যা আপডেট হয়নি তা হলো মানুষের দুর্ভোগ। বর্ষার রূপটাই বোধকরি এ রকম। সবকিছু ছাপিয়ে বর্ষা বিলাসী হয়ে উঠি আমরা। আর গুনগুন করে ওঠে মন...রিমঝিম ঘন ঘন বরষে, গগনে ঘনঘটা শিহরে তরুলতা, ময়ূর ও ময়ূরী নাচিছে হরষে, রিমঝিম ঘন ঘন বরষে...।
রিমঝিম এই বৃষ্টিতে পানি জমতে দেখেছি জুরিখের বড় রাস্তায়ও। কিন্তু মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েনি। আনলিমটেড দুর্ভোগেও পড়তে হয়নি। এখানকার আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেনেজ সিস্টেমগুলো সমস্ত শহরজুড়ে একই সূত্রে গাঁথা। মুহূর্তেই পানি সরে গিয়ে আপনাকে দুর্ভোগ থেকে রেহাই দেবে। আবর্জনাগুলো নির্ধারিত জায়গায় সুনসান সাজানো। কোথাও কেউ ফুটপাত দখল করে নেই।
এ সব দেখে ভাবি আমাদের দেশের মানুষগুলো কবে রেহাই পাবে দুর্ভোগ থেকে। আমরা কেউ জানি না কবে। জনগণ কি ভুলে গেছেন নগর পিতাদের সেই সব আওড়ানো বুলি? তারা বলেছিলেন, জনগণের জন্য নিজের জীবনকেই উৎ​সর্গ করে দেবেন। আর আমরাও জানি তাদের খেদিপেচি নামের এসব কথার অর্থ। কিন্তু তাদের জেনে রাখা ভা​লো সব কিছুরই বিনিময় হবে! আর যদি তারা সত্যি জনগণের বন্ধু হন, তাহলে ধূপধুনা জ্বেলে হাজার হাজার চোখ তাদের জন্য প্রার্থনা করবেন।

কদম ফুল
কদম ফুল

এই লেখা যখন লিখতে বসেছি তখন দেখি, এখানের আকাশে কালো মেঘ জমে আছে। কিপটে বৃষ্টি আসি আসি করছে আর ইউটিউবে বেজে চলছে—
মেঘ বলেছে যাব যাব, রাত বলেছে যাই,
সাগর বলে কূল মিলেছে, আমি তো আর নাই...
হে আমি কোথায় যেন হারাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম
তুমি কি এখনো বৃষ্টি ভালোবাস?
খোঁপায় কদম ফুল গাঁথো?
ওই রবীন্দ্র সংগীতটা গাও?
ভুল করে কলম রেখে আসো বাসায়?
ওই লাল শাড়িটা পরো? নাকি তুমি এখন অন্য কেউ?
আমাদের রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের মতোই সব পেয়ে সব ভুলে যাওয়া এক মানুষ!