ম্যানেজমেন্ট গুরু সুবীর চৌধুরীর ৫ পরামর্শ

বাংলাদেশে জন্ম নেওয়া সুবীর চৌধুরীকে বলা হয় ‘দ্য কোয়ালিটি প্রফেট’ বা ‘উৎকর্ষের ভবিষ্যদ্বক্তা’। তিনি বড় বড় কোম্পানিকে কোয়ালিটি বা গুণগত উৎকর্ষ বাড়াতে পরামর্শ দেন। এতে ব্যয় সংকোচন হয় কোম্পানিগুলোর, মুনাফাও বাড়ে। সুবীর পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যানেজমেন্ট কনসালট্যান্ট বা ব্যবস্থাপনা পরামর্শকদের একজন। ফরচুন ১০০ তাঁর গ্রাহক, জেনারেল মোটর, হুন্দাই, কিয়া মোটরস, জেরক্স, ক্যাটারপিলার, আমেরিকান অ্যাক্সেল, বোস, দায়িয়ু, ফোর্ড—এ রকম বড় বড় কোম্পানি তাঁর গ্রাহক।

সুবীর চৌধুরী
ছবি: সংগৃহীত

সুবীর চৌধুরী প্রথম আলোর কাছে বাংলাদেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য ৫টি পরামর্শ দিয়েছেন। শুধু ব্যবসা বাড়াতে নয়, তরুণদের মানসিক উৎকর্ষও বাড়াবে এসব পরামর্শ।

১. কাজকে ভালোবাসা

নিজের কাজকে এমনভাবে ভালোবাসতে হবে যেন এর জন্য জীবন দেওয়া যায়। কাজের প্রতি অনুরাগ এমন এক জিনিস, যার কারণে হেরে গেলেও মানুষ থেমে যায় না, আবার উঠে দাঁড়ায়, যতক্ষণ না লক্ষ্যে পৌঁছানো যায়। এই অনুরাগ শুরুতেই গড়ে তুলতে হবে, পরবর্তীকালে তা অর্জন করা যায় না।

২. বড় স্বপ্ন দেখা

চোখের সামনে একটা বড় লক্ষ্য দাঁড় করাতে হবে, যেটা অর্জন করা কঠিন। তারপর সেটার পেছনে ছুটতে হবে। সুবীর চৌধুরীর দাদু তাঁকে বলতেন, তুমি ঘরের সিলিং নয়, বরং আকাশ ধরার লক্ষ্য স্থির করো। লক্ষ্য বড় হলে সুবিধা হলো, তা অর্জন করা সম্ভব না হলেও অনেকটা পথ এগোনো যাবে। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সুবীরের পরামর্শ, ছোট স্বপ্ন নিয়ে বড় কিছু পাওয়া যাবে না। স্বপ্ন বড় ছিল বলেই সুবীর চৌধুরী খুব কম বয়সে ম্যানেজমেন্ট গুরু হতে পেরেছিলেন।

৩. অন্যের বিষয়ে চিন্তা করা

ছোটবেলায় সুবীর যখন চট্টগ্রাম থাকতেন, তখন বাবা তাঁকে শিখিয়েছিলেন, চড়াই পার হওয়ার সময় রিকশা থেকে নেমে যেতে হবে, যাতে রিকশাচালকের কষ্ট না হয়। এই শিক্ষা সুবীরের জীবনটা গড়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, সফল হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে, অন্যের সুবিধা–অসুবিধা বিবেচনা করতে হবে।

৪. চমকের আগে মৌলিক চাহিদা পূরণ

উৎকর্ষগুরু সুবীরের মতে, যেকোনো পণ্যের তিনটা কাজ থাকে—মৌলিক কাজ, কর্মদক্ষতা ও চমক। পণ্যকে চমক–জাগানিয়া করার আগে সেটার মৌলিক কাজ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, অনেক সময়ই দেখা যায়, হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার চেয়ে হাসপাতালের সাজগোজের দিকে বেশি জোর দেওয়া হয়। এ ধরনের কৌশলে পণ্য দ্রুত গ্রহণযোগ্যতা হারায়।

৫. প্রবীণ ও অভিজ্ঞদের সংযোগ তৈরি

সুবীর চৌধুরী সফল হওয়ার ব্রত নেওয়ার পর বিশ্বের শীর্ষ ম্যানেজমেন্ট গুরুদের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করেন। তিনি বলেন, বয়সের পার্থক্য সত্ত্বেও আমি তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করি। তাঁদের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা সুবীর চৌধুরীর জীবন গড়ে দেয়। তরুণদের পরিবার ও কাজের ক্ষেত্রে বায়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিদের কাছাকাছি থাকার পরামর্শ দেন সুবীর চৌধুরী। তাঁদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা তরুণদের সমৃদ্ধ করবে।