সাক্ষাৎকার
কর্মসংস্থানেও ভূমিকা রাখছে এজেন্ট ব্যাংকিং
এজেন্ট ব্যাংকিং নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন দুটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং একটি ব্যাংকের বিকল্প ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান
জাফর আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কী কী সেবা দেওয়া হচ্ছে?
জাফর আলম: সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এজেন্টদের মাধ্যমে হিসাব খোলা, নগদ জমা ও উত্তোলন, ফান্ড ট্রান্সফার ও হিসাবের স্থিতি জানা, পল্লী বিদ্যুৎ বিল গ্রহণ, রেমিট্যান্স প্রদান, অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠানো, ক্ষুদ্র বিনিয়োগসহ নানান ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: এখন পর্যন্ত দেশের কতটি উপজেলায় আপনাদের এজেন্ট ছড়িয়ে পড়েছে? দৈনিক কেমন লেনদেন হচ্ছে?
জাফর আলম: বর্তমানে ২১০টি আউটলেটের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে যাচ্ছে। দেশব্যাপী ৪০ জেলার ১৬৮টি উপজেলায় আমাদের এজেন্টরা সেবা দিচ্ছে। এসব এলাকায় এজেন্ট আউটলেটে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ১০ কোটি টাকা। এজেন্ট ব্যাংকিং সেবায় গ্রাহক রয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার। এতে আমানতের পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। এই বছরে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে এজেন্ট সেবা আরও বিস্তৃত হবে।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: এজেন্টদের মাধ্যমে বিনিয়োগ দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
জাফর আলম: আমরা ইতিমধ্যে ক্ষুদ্র বিনিয়োগ প্রকল্প চালু করেছি। খুব শিগগির এসএমই ও কৃষি বিনিয়োগ প্রকল্প এবং রিটেইল ইনভেস্টমেন্টের আওতায় ভোক্তা বিনিয়োগ প্রকল্প চালু করা হবে। ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সব ব্যাংকিং সুবিধা পাবে। এতে গ্রামেগঞ্জে কর্মচাঞ্চল্য সৃষ্টি হবে। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙা হবে।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: ভবিষ্যতে এজেন্টরা আর কী কী সেবার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে?
জাফর আলম: আগামী দিনে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেই প্রান্তিক মানুষ সব ব্যাংকিং সুবিধা পাবেন। শিগগির গ্রাহকেরা এজেন্ট আউটলেট থেকে কিউআর কোড দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এজেন্টের মাধ্যমে যাতে গ্রামের মানুষ সরকারি বিভিন্ন অনুদান ও বৃত্তির টাকা এবং মুক্তিযোদ্ধারা তাঁদের সম্মানীর ভাতা গ্রহণ করতে পারেন, এ লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমাদের ব্যাংকের যাঁরা এজেন্ট হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগ মানুষ ক্ষুদ্র ও ট্রেডিং ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার ও চাকরিজীবী, সাবেক এনজিও ও বিমা কর্মী এবং বিদেশফেরত আইটি-ভিত্তিক দক্ষ জনবল। তা ছাড়া শিক্ষিত যুবকেরা চাকরির পরিবর্তে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যয়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। ফলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থানও হয়েছে এই সেবায়।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: এজেন্ট ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের কি মুনাফা হচ্ছে, নাকি লোকসান গুনতে হচ্ছে?
জাফর আলম: আমাদের উদ্দেশ্য হলো ব্যাংকিং সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এজেন্ট যেন লাভের ভিত্তিতে আউটলেট পরিচালনা করতে পারে। এখানে ব্যাংকের মুনাফার বিষয়টি মুখ্য নয়। তারপরও বলতে পারি, ব্যাংকের মুনাফা বাড়াতে এজেন্ট ব্যাংকিং নিশ্চয়ই ভূমিকা রাখবে। ২০২১ সালে এসে আমাদের ব্যাংক এই খাত থেকে মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে।