একটি কোম্পানি নিবন্ধন করতে বাংলাদেশে গড়ে আট দিন সময় ব্যয় করতে হয়, যা তিন দিনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। নতুন ও অনভিজ্ঞ আবেদনকারীদের যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদপ্তর (আরজেএসসি) নিবন্ধন পেতে তুলনামূলক বেশি সময় প্রয়োজন হয়। ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে গঠিত গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) এক জরিপে এসব তথ্য উঠে আসে। রোববার এক ওয়েবিনারে এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়।
‘রিমুভিং টাইম, কস্ট অ্যান্ড প্রসেস রিলেটেড বটলনেকস ইন কোম্পানি রেজিস্ট্রেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক জরিপে বিল্ড আরও জানায়, সমস্যা এড়াতে অনেকে তৃতীয় পক্ষের সাহায্য নেন, যে কারণে নিবন্ধন খরচ বেড়ে যায়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৮৯ শতাংশ জানিয়েছে, তাদের তৃতীয় পক্ষের সম্পৃক্ততা প্রয়োজন পড়ে। এতে তাদের খরচ বেড়েছে ৪৯ দশমিক ২২ শতাংশ।
ট্রেড লাইসেন্স নিতে অন্তত ৬৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারীকে তৃতীয় পক্ষের সাহায্য নিতে হয়েছে। যে কারণে আরও ৩২ দশমিক ৩৩ শতাংশ বেশি ব্যয় করতে হয়েছে।
এ বছর মার্চ ও এপ্রিল মাসে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৫০টি বেসরকারি, বিদেশি, অংশীদারি ও নারী মালিকানাধীন কোম্পানি এই জরিপে অংশ নেয়। এ ছাড়া যেসব আইনি প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন কাজের সঙ্গে জড়িত, তাদেরও জরিপে যুক্ত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিল্ডের চেয়ারপারসন আবুল কাসেম খান, বিল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম, ইউএসএআইডির ফিড দ্য ফিউচার বাংলাদেশ প্রজেক্টের ইমপ্রুভিং ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস এনাব্লিং এনভায়রনমেন্ট অ্যাক্টিভিটির দলনেতা ইগোর গুটান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান মার্ক শিমান, বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রেবেকা রবিনসনসহ অনেকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ সরকার সব ক্ষেত্রে কার্যকর নীতিগত সংস্কারে বদ্ধপরিকর। কোম্পানি নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক ব্যয় ব্যাপক হারে কমিয়ে আনতে আরও ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। সরকার বিদ্যমান কোম্পানি নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজতর করতে এবং ধাপের সংখ্যা কমিয়ে আনতে কাজ করবে। তিনি আরও বলেন, আরজেএসসি এরই মধ্যে বেশ কিছু সংস্কার বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু আরও উন্নয়নের সুযোগ আছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সমন্বয় জরুরি।
মার্ক শিমান বলেন, অপ্রয়োজনীয় লাইসেন্স ও প্রক্রিয়াগত জটিলতা দূর করা গেলে ব্যবসার বিশ্বায়নের এই যুগে বাংলাদেশ ইতিবাচক অবস্থানে পৌঁছাবে।
অনুষ্ঠানে বিনিয়োগ আকর্ষণে কোম্পানি নিবন্ধনের সময় কমিয়ে আনতে স্বয়ংক্রিয় রেজিস্ট্রেশন সার্ভিস চালু, সব পর্যায়ের কোম্পানি নিবন্ধনের জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস, আবেদনকারীদের সক্ষমতা উন্নয়ন, মূল্য পরিশোধের জন্য মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস অন্তর্ভুক্তকরণ, মোবাইল-বান্ধব ওয়েবসাইট নিশ্চিতকরণ, অনলাইন আবেদন সংশোধন প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য এক্সপ্রেস সার্ভিস চালুকরণের সুপারিশ করা হয়।