সাক্ষাৎকার: এম এ রাজ্জাক খান
গৃহস্থালি ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম আগের চেয়ে সাশ্রয়ী
মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ দেশের ইলেকট্রনিক পণ্যের বাজারে অন্যতম ব্র্যান্ড। গ্রুপটির উৎপাদিত পণ্য ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে। ইলেকট্রনিক পণ্যের বাজার, এই শিল্পের সম্ভাবনাসহ সার্বিক অবস্থা নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন মিনিস্টার গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি এম এ রাজ্জাক খান। তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সানাউল্লাহ সাকিব।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: মিনিস্টার গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়েছে কবে? আর কবে থেকে উৎপাদন শুরু করেছে?
এম এ রাজ্জাক খান: ২০০২ সালে মাত্র পাঁচজন কর্মচারী নিয়ে ও সাদা–কালো টেলিভিশন বাজারজাতকরণের মধ্য দিয়ে দেশের ইলেকট্রনিকসের বাজারে মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের যাত্রা শুরু হয়। লক্ষ্য ছিল, দেশের মানুষের আস্থা ও ভালোবাসার ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে ওঠা। সেই লক্ষ্য পূরণে বেশি সময় লাগেনি। উচ্চপ্রযুক্তি মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন করে মানুষের আস্থা ও ভালোবাসা অর্জন করে নিয়েছে মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ। আর এখন তো শুধু সামনে এগোনোর পালা।
প্রশ্ন :
আপনারা এখন কী কী পণ্য উৎপাদন করছেন?
এম এ রাজ্জাক খান: মিনিস্টার গ্রুপ রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এয়ার কন্ডিশনার (এসি), এলইডি টিভি, স্মার্ট এলইডি টিভি, ব্লেন্ডার, গ্রাইন্ডার, রাইস কুকার, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, ইলেকট্রিক কেটলি, গ্যাস বার্নার, ইন্ডাকশন কুকার, ফ্রাই প্যান, ফ্যান, আয়রন, স্ট্যাবিলাইজারসহ ২০টির বেশি পণ্য উৎপাদন করে আসছে। প্রতিটি পণ্যেই রয়েছে বিদ্যুৎ–সাশ্রয়ী প্রযুক্তি ও অধিক স্থায়িত্বের নিশ্চয়তা। এ ছাড়া মিনিস্টার গ্রুপ সম্প্রতি বেশ কিছু হিউম্যান কেয়ার ও টয়লেট্রিজ পণ্য উৎপাদন ও বিপণন শুরু করেছে।
প্রশ্ন :
উৎপাদন ও বিক্রির দিক থেকে দেশে হোম অ্যাপ্লায়েন্সের বাজারে মিনিস্টারের অবস্থান কেমন?
এম এ রাজ্জাক খান: মিনিস্টার হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য বিক্রিতে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। দেশের মানুষ আমাদের ব্র্যান্ডকে ভালোবেসেছে। এ জন্য আমরা তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ এবং এই ভালোবাসা আমরা ধরে রাখতে চাই। আমি মনে করি, ‘সমাজের সঙ্গে মিশে যেতে হবে, সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। মানুষের ভালোবাসা পেতে হবে। মানুষের সেবা করার মাধ্যমে আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যাব।’
প্রশ্ন :
ফ্রিজ ও এসি ছাড়া অন্য পণ্যগুলোর চাহিদা কেমন? মিনিস্টার গ্রুপের বাজার শেয়ার কী রকম?
এম এ রাজ্জাক খান: রেফ্রিজারেটর আর এসি ছাড়াও আমাদের ২০টির বেশি পণ্য রয়েছে। ইতিমধ্যে দেশীয় বাজারের একটি বড় অংশ আমাদের দখলে এসেছে। আমাদের হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যগুলো ইতিমধ্যে মানুষের পছন্দের ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে।
প্রশ্ন :
বছরের কোন সময়ে এসব পণ্য বিক্রি বেশি হয়?
এম এ রাজ্জাক খান: কিছু কিছু ইলেকট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে মৌসুম একটা বড় ব্যাপার। যেমন, গরম এলে এসি ও ফ্রিজ আর বিশ্বকাপের সময় টিভি বিক্রি বাড়ে। তবে অন্য সব পণ্যের চাহিদা সব সময়ই থাকে।
প্রশ্ন :
দেশের উন্নতির সঙ্গে হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাত যেভাবে বিকশিত হওয়ার প্রয়োজন ছিল, তা কি হচ্ছে?
এম এ রাজ্জাক খান: ইলেকট্রনিকসের তৈরি হোম অ্যাপ্লায়েন্স তথা গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য পণ্য ও সরঞ্জামগুলোর দাম এখন আগের চেয়ে অনেক সাশ্রয়ী হয়েছে। সরকারের সহায়ক নীতিমালা ও স্থানীয় উদ্যোক্তারা পণ্য উৎপাদনে আসায় এটি সম্ভব হয়েছে। এ ক্ষেত্রে মিনিস্টার-মাইওয়ান দেশের মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করে দিয়েছে।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো: এই খাতে কী ধরনের নীতিসহায়তা দরকার? ভোক্তা ও উদ্যোক্তাদের রুচি–পছন্দের সঙ্গে উদ্যোক্তাদের কীভাবে তাল মেলানো উচিত?
এম এ রাজ্জাক খান: সরকার ভ্যাট ও ট্যাক্স মওকুফ, স্বল্প সুদে ব্যাংকঋণ প্রদানসহ বিভিন্ন নীতি–সুবিধা দিয়েছে। ইলেকট্রনিকস শিল্প জোন নির্ধারণ করেছে। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন হচ্ছে। দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিরও উন্নয়ন হচ্ছে। তাই ভোক্তাদের রুচি ও চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আকর্ষণীয় ডিজাইনের গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা প্রয়োজন।