জনপ্রিয় হচ্ছে ডিজিটাল ‘ঈদ সালামি’

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মারজানা মাহমুদ ফেসবুকে একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন। যেখানে ঈদের একটি শুভেচ্ছা বার্তা শোভা পাচ্ছে। বার্তাটি এসেছে তাঁর বান্ধবী নাজিয়া তাসনীমের কাছ থেকে। মূলত এই বার্তার সঙ্গে এসেছে ঈদের ডিজিটাল সালামিও। বিষয়টি বুঝতে সমস্যা হলে চলুন তাঁর কাছ থেকেই শোনা যাক এই ঈদ বার্তা ও সালামি আদান-প্রদানের বিষয়ে।

মুঠোফোনে মারজানা মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছোটবেলায় ঈদ কার্ড কিনে সেখানে সুন্দর সুন্দর কথা লিখে বান্ধবীদের উপহার দিতাম। এখন সেই চল আর নেই বললেই চলে। শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যম বদলে গেছে। পাশাপাশি বদলেছে ঈদে বড়দের কাছ থেকে ঈদি (ঈদ সালামি) পাওয়ার ধরনও। এই দুটি কাজই এখন মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের (এমএফএস) মাধ্যমে সম্ভব। আমি মূলত এবার বিকাশ অ্যাপস ব্যবহার করে ২৫-৩০ জনের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও সালামি দুটোই আদান-প্রদান করেছি।’

প্রিয়জনকে উপহার পাঠানো আরও রঙিন ও আনন্দময় করে তুলতে ২০২১ সালে বিকাশ তাদের অ্যাপে ‘ঈদ সালামি এবং ঈদ শুভেচ্ছা’ অপশন দুটি চালু করে।

কেবল ঈদ নয়, দেশের বড় উৎসবগুলোকে কেন্দ্র করে শুভেচ্ছা বার্তাসহ টাকা পাঠানোর সেবা চালু করে থাকে এমএফএস প্রতিষ্ঠান বিকাশ। তবে টাকা পাঠানো বা লেনদেন সব এমএফএস প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই করা যায়। প্রিয়জনকে উপহার পাঠানো আরও রঙিন ও আনন্দময় করে তুলতে ২০২১ সালে বিকাশ তাদের অ্যাপে ‘ঈদ সালামি এবং ঈদ শুভেচ্ছা’ অপশন দুটি চালু করে।

গ্রাহকের আনন্দ বাড়াতে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে এই উদ্ভাবন এনেছে বিকাশ। প্রিয়জনকে খুশি করতে টাকা উপহার দেওয়ার বহু চর্চিত প্রথাটিকেই ডিজিটাল মাধ্যমে আনা হয়েছে।
শামসুদ্দিন হায়দার, হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস, বিকাশ

বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার বলেন, ‘গ্রাহকের আনন্দ বাড়াতে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনে এই উদ্ভাবন এনেছে বিকাশ। প্রিয়জনকে খুশি করতে টাকা উপহার দেওয়ার বহু চর্চিত প্রথাটিকেই ডিজিটাল মাধ্যমে আনা হয়েছে। বিকাশের ঈদ সালামি অপশনটি এরই মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। কয়েক দিন ধরেই বিকাশের গ্রাহকদের বড় অংশ এই ফিচার ব্যবহার করছেন। তবে ঈদের চাঁদ দেখা যাওয়ার পর থেকে ফিচারটির ব্যবহার বহু গুণ বেড়ে যায়।’
এবার ঈদে এই সুযোগটাই নিয়েছেন বেসরকারি চাকরিজীবী উম্মে সালমা। তিনি বলেন, এবার সরাসরি ঈদ সালামি দেওয়ার পাশাপাশি বিকাশ-রকেট-নগদ ও উপায়ের মতো এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে সালামি নিয়েছি। যদিও ঈদে আমার সব সময় সালামি হিসেবে নতুন টাকাই পছন্দ। তবে এবার অনেকেই এমএফএসে টাকা পাঠিয়েছেন। এমএফএসে প্রায় ২ হাজার টাকা সালামি পেয়েছি।

আমরা ঈদের জন্য আলাদা করে বিশেষ কোনো ফিচার না আনলেও রমজানে জাকাতের জন্য ক্যালকুলেটরসহ একটি ফিচার নিয়ে এসেছিলাম। সেটা বেশ সাড়া ফেলেছে।
জাহিদুল ইসলাম, হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস, উপায়

এমএফএস প্রতিষ্ঠান উপায়ের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ঈদের জন্য আলাদা করে বিশেষ কোনো ফিচার না আনলেও রমজানে জাকাতের জন্য ক্যালকুলেটরসহ একটি ফিচার নিয়ে এসেছিলাম। সেটা বেশ সাড়া ফেলেছে। মানুষ এখন ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ত হচ্ছে। সুতরাং গ্রাহক চাহিদা সামনে রেখে নতুন সেবা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

আরও পড়ুন

যেভাবে ঈদ সালামি ও শুভেচ্ছা আদান-প্রদান

শুভেচ্ছা কার্ডসহ সালামি পাঠাতে বিকাশ অ্যাপ থেকে যে নম্বরে সেন্ড মানি করা হবে, তা নির্বাচন করার পরপরই নিচের অংশে ‘আপনার উদ্দেশ্য সিলেক্ট করুন’ ট্যাব দেখা যাবে। সেখানে থাকা ঈদ সালামি অথবা ঈদ মোবারক অপশনগুলো থেকে যেকোনো একটি নির্বাচন করতে হবে।
এরপর টাকার অঙ্ক লিখে পরের ধাপে গেলে রেফারেন্স অংশের নিচে ‘কার্ডের মেসেজ আপডেট করুন’ ট্যাব দেখা যাবে। বিকাশ অ্যাপে সংযুক্ত রয়েছে ‘ঈদের আনন্দ ঘরে ঘরে, সালামি দিলাম বিকাশ করে’ অথবা ‘এই ঈদ আপনার জীবনে নিয়ে আসুক শান্তি ও সমৃদ্ধি। ঈদ মোবারক’।

আরও পড়ুন

গ্রাহকেরা চাইলে এই মেসেজ দুটি রাখতে পারেন অথবা নিজের পছন্দমতো নতুন মেসেজ লিখে দিতে পারেন। বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই মেসেজ লেখার সুযোগ রয়েছে। স্বাক্ষরের অংশে নিজের নাম বা সম্পর্কের পরিচয় যেমন মা, চাচা, মামা, ভাই, বোন ইত্যাদি লিখে দিতে পারবেন। পরের ধাপে বিকাশ পিন দিলেই শুভেচ্ছা বার্তাসহ সেন্ড মানি করা হয়ে যাবে।
যে গ্রাহক শুভেচ্ছা বার্তা বা ঈদ সালামি পেয়েছেন, তিনি তাঁর ডিভাইসের নোটিফিকেশনে একটি গিফট বক্স দেখতে পাবেন। বক্সে ক্লিক করে বিকাশ অ্যাপে ঢুকলেই সালামির পরিমাণ এবং মেসেজ দেখতে পাবেন।