পাইকারি বাজারে সবজির দাম কমলেও খুচরায় প্রভাব নেই

রাজধানীর কারওয়ানবাজারে অন্য সময়ে শাকসবজির ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও গতকাল সন্ধ্যার দিকে ছিল কম l প্রথম আলো
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে অন্য সময়ে শাকসবজির ক্রেতাদের ব্যাপক উপস্থিতি থাকলেও গতকাল সন্ধ্যার দিকে ছিল কম l প্রথম আলো

টানা তিন দিনের ছুটিতে রাজধানী শহর এখন কিছুটা ফাঁকা। তাই কাঁচাবাজারে ক্রেতাদের সমাগমও অন্য সময়ের চেয়ে কম। এই অবস্থায় পাইকারি বাজারে শাকসবজির দাম কেজিতে দু-তিন টাকা পর্যন্ত কমেছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম প্রতি পিসে কমেছে তিন-চার টাকা। তবে খুচরা বাজারে এই মূল্যহ্রাসের কোনো প্রভাব পড়েনি।
ঢাকার কারওয়ান বাজারের আড়তে আলু ছাড়া অন্য সবজিগুলোর দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিপ্রতি দু-তিন টাকা কমেছে। নতুন সপ্তাহের প্রথম দিনে গতকাল শনিবার প্রকার ও মানভেদে আলু ১০ থেকে ১২, মরিচ ১০ থেকে ১৫, শিম ৭ থেকে ৮, বেগুন ১০ থেকে ১৫, পটোল ৩০-৩৫ ও টমেটো ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। অবশ্য পাশের খুচরা বাজারেই প্রতি কেজি মরিচ ৪০, পটোল ৪৫ থেকে ৫০, বেগুন ৩০ থেকে ৫০, করলা ৬০, টমেটো ১৫ থেকে ২০ ও শিম ১০ থেকে ১২ টাকা করে দাম হাঁকান বিক্রেতারা।
জানতে চাইলে কারওয়ান বাজার কাঁচামাল আড়ত ব্যবসায়ী মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘অনেক দিন ধরেই তো সবজির দাম কমতির দিকে। বৃহস্পতিবার থেকে আবার ক্রেতা কম থাকায় দাম আরও কিছু কমেছে। তবে খুচরা বাজারে কী অবস্থা, আমার জানা নেই।’
পাঁচ বছর ধরে কারওয়ান বাজারে খুচরা ব্যবসা করেন মোহাম্মদ সুমন। গতকাল তিনি প্রতি কেজি টমেটো ২০, পেঁপে ১৫ ও গাজর ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছিলেন। ছোট ও বড় আকারের ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম হাঁকছিলেন যথাক্রমে ১৫ ও ২০ টাকা। তবে ক্রেতারা দর-কষাকষি করলে ছোট আকারের ফুল ও বাঁধাকপি ১০ টাকায় ও বড়গুলো ১৫ টাকায় বিক্রি করেন।
জানতে চাইলে সুমন বললেন, ‘পাইকারি বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম প্রতি পিসে তিন-চার টাকা কমেছে। তবে ক্রেতা না থাকায় বিক্রি কম। গতকাল (গত শুক্রবার) অনেক সবজিই বিক্রি হয়নি, নষ্ট হয়েছে। তাই দাম কমালে শেষ পর্যন্ত পোষানো যাচ্ছে না।’
কারওয়ান বাজারের পাশাপাশি গতকাল পুরান ঢাকার নারিন্দা বাজার ঘুরে দেখা গেল, গত সপ্তাহে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ, চীনা রসুন ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে যেখানে উঠেছিল, এ সপ্তাহেও প্রায় সেখানেই আছে। দুই বাজারেই দেশি পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫ টাকা কেজি। এ ছাড়া আমদানি করা চীনা রসুনের কেজি ১৮০-২০০ টাকা। দেশি রসুনের কেজি ৭০-৮০ টাকা। চীনা আদার কেজি ৮০ ও দেশি আদা ৬০ টাকা। ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৪৫-১৬০ টাকা।
জানতে চাইলে পুরান ঢাকার পাইকারি মোকাম শ্যামবাজারের রতন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী রতন কুমার সাহা বলেন, গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে দু-তিন টাকা বেড়েছিল। কারণ, মুড়িকাটা জাতের পেঁয়াজ শেষ। সে জন্য দাম একটু বেড়েছে, তবে এটি খুবই সাময়িক। অবশ্য আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। তিনি জানান, শ্যামবাজারে গতকাল দেশি পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল ২২-২৩ টাকা কেজি। আর ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ১৬-১৮ টাকা।
রতন কুমার সাহা বলেন, চীনের বাজারেই রসুনের দাম বেড়ে গেছে। প্রতি টনের দাম এখন ১ হাজার ৭৫০ মার্কিন ডলার। সেই হিসাবে দেশে ১৬০-১৭০ টাকা কেজি দাম পড়ছে। তবে দেশি রসুনের পাইকারি দর মাত্র ৪০-৪৫ টাকা কেজি।
কারওয়ান বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৩৮০-৪০০, খাসির মাংসের কেজি ৫০০-৬০০, ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ৩৫ ও হাঁসের ডিমের হালি ৪০ টাকা। লবণের দাম আগের মতোই বেশি আছে, কেজি ৩২ টাকা।