মংলা বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা দুই হাজারের বেশি রিকন্ডিশন্ড গাড়ি পুলিশের তত্ত্বাবধানে দেওয়ার সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা)।
একই সঙ্গে গত বছরের ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী আটকে থাকা গাড়িগুলো ছাড় করার সুযোগ দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি। ঢাকার পল্টনে বারভিডার কার্যালয়ে গতকাল বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বারভিডার সভাপতি আবদুল হামিদ শরীফ বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের বেইলআউটের (সমস্যা থেকে উত্তরণ) সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের তা দেওয়া হচ্ছে না। উল্টো আমাদের গাড়িগুলোকে পুলিশের তত্ত্বাবধানে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ...বিনিয়োগ–কারীদের হত্যা করে পুলিশ বাহিনীকে বাঁচালে কি দেশের অর্থনীতি টিকবে?’
বারভিডা সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশে জাপানি গাড়ি বিক্রির পাশাপাশি জাপানে আমরা বাংলাদেশের অ্যাম্বাসেডর হিসেবেও কাজ করি। বাংলাদেশে এসে বিনিয়োগ করতে জাপানিদের উৎসাহিত করে আসছি। এখন জাপানিরা যদি শোনে তাদের গাড়ি একটি সরকারি বাহিনীকে দেওয়া হচ্ছে, তাহলে তাদের কাছে কী মেসেজ (বার্তা) যাবে?’
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আটকে থাকা ৫১২টি গাড়ি আমদানিনীতি মেনে আনা হয়নি। তাই এগুলো খালাস করতে দেওয়া হয়নি। ৮৮৪টি গাড়ি শুল্কায়ন মূল্য নিয়ে জটিলতার কারণে খালাস হয়নি। বাকি ৬৮৩টি গাড়ি এ বছরের মার্চের আগে আমদানি হলেও হরতাল-অবরোধের কারণে খালাস করা যায়নি।
বারভিডা সভাপতি বলেন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। এমনকি সিদ্ধান্তের অনুলিপিও পাঠানো হয়নি। সিদ্ধান্তের পরই পুলিশ বন্দরে গিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে পছন্দ অনুযায়ী গাড়িতে সিল লাগাচ্ছে। তিনি বলেন, পুলিশ বিভাগকে গাড়ি দেওয়া ও নিলামে তোলার আগে ব্যবসায়ীদের গাড়ি খালাস করার সুযোগ দেওয়া উচিত। ব্যবসায়ীরা যদি গাড়ি খালাস করাতে না পারেন, তবে তা নিলামে ও পুলিশ বিভাগকে দেওয়া যেতে পারে।
বারভিডার সাবেক সভাপতি আবদুল হক বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখে আমদানিকারকদের সঙ্গে বসলে উত্তরণের একটি পথ বেরিয়ে আসবে। আমরা বিশ্বাস করি, সরকারের কোনো দপ্তর গাড়ি নিলে টাকা দিয়ে নেবে। এ জন্য তো আমাদের সঙ্গে বসতে হবে। দাম তো শুধু ক্রেতা ঠিক করতে পারেন না। এর জন্য বিক্রেতাকে দরকার হয়। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে উইন উইন সিচুয়েশন সৃষ্টি করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বারভিডার প্রথম সহসভাপতি এ বি এম আনিসুজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।