বন্ধ পাটকলের শ্রমিকের পাওনা দিতে ২১২ কোটি টাকা বরাদ্দ
লোকসানের বোঝা বইতে না পেরে গত বছরের ১ জুলাই রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল বন্ধ করে দিয়েছিল সরকার। তাতে ২৪ হাজার ৮৮৬ স্থায়ী শ্রমিককে স্বেচ্ছা অবসরে (গোল্ডেন হ্যান্ডশেক) পাঠানো হয়। গত এক বছরে স্থায়ী শ্রমিকদের বড় অংশই ক্ষতিপূরণ পেলেও বদলি শ্রমিকেরা বঞ্চিত ছিলেন। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার ২১ হাজার ৫২২ জন বদলি শ্রমিকের পাওনা পরিশোধে ২১২ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) বন্ধ পাটকলের বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধে এই অর্থ ব্যয় করা হবে। বরাদ্দ করা অর্থ শ্রমিকেরা নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে চেকের মাধ্যমে পাবেন।
অর্থ মন্ত্রণালয় পরিচালন ঋণ বা অপারেশন লোন হিসেবে বিজেএমসিকে ২১২ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। এই অর্থ চলতি অর্থবছরে বিজেএমসির ১৮টি পাটকলের ২১ হাজার ৫৫২ জন বদলি শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধ ছাড়া অন্য কোনো খাতে ব্যয় করা যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, বদলি শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধে প্রত্যেক শ্রমিকের মিল থেকে দেওয়া টোকেন ও পরিচয়পত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ব্যাংক হিসাব থাকতে হবে। অবশ্যই এনআইডি যাচাই করে ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে বদলি শ্রমিকের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে। কোনোভাবেই এনআইডি এবং ব্যাংক হিসাব ব্যতীত বদলি শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ করা যাবে না। বদলি শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের সময় মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া পাওনার বিষয়টি সরকারি বিধিবিধানের আলোকে পুনরায় যাচাই-বাছাই করে নিশ্চিত হবেন। বরাদ্দ করা অর্থের জন্য অর্থ বিভাগের সঙ্গে বিজেএমসিকে ঋণচুক্তি করতে হবে।
বিজেএমসির তথ্যানুযায়ী, বন্ধ হওয়া পাটকলে বদলি শ্রমিকের সংখ্যা ২১ হাজার ৬৪৩। তাঁদের পাওনা ২১৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। তবে ৯১ শ্রমিকের ত্রুটিপূর্ণ এনআইডি রয়েছে। তাঁদের পাওনার পরিমাণ ১ কোটি ৪ লাখ টাকা। ত্রুটিপূর্ণ এনআইডিধারী শ্রমিক ছাড়া বাকিদের পাওনা পরিশোধের জন্যই ২১২ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিজেএমসির বন্ধ পাটকলগুলো ভাড়া বা ইজারা (লিজ) পদ্ধতিতে চালুর কার্যক্রম চলমান আছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পুনরায় পাটকল চালু হলে অবসায়নকৃত শ্রমিকেরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজের সুযোগ পাবেন। পর্যায়ক্রমে সব শ্রমিককে পুনর্বাসন করা হবে।