মেঘনার তীরে এসইজেড!

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও বন্দর উপজেলার তিনটি নদীর মোহনায় পর্যটন কেন্দ্র, নিট পল্লি এবং সোনারগাঁয়ের আনন্দবাজার এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) স্থাপনের কথা ভাবছে সরকার।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ ও বন্দর উপজেলার মেঘনা, শীতলক্ষ্যা ও ধলেশ্বরী—এই তিন নদীর মোহনায় শান্তিনগর চরে এক হাজার একর সরকারি খাসজমির ওপর নিট পল্লি ও একই এলাকায় ১৫০ একর খাসজমিতে পর্যটন কেন্দ্র এবং সোনারগাঁ উপজেলার আনন্দবাজার এলাকায় মেঘনা নদীর তীরে সনমান্দি, বৈদ্যেরবাজার ও বারদী ইউনিয়নের পাঁচটি মৌজায় এক হাজার একর জমির ওপর এসইজেড স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা গত ৭ আগস্ট ও ৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব ও পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অফিসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর তিনটি প্রকল্পের গুরুত্ব উল্লেখ করে চিঠি দেন।
জেলা প্রশাসক চিঠিতে বলেছেন, দেশের নিট শিল্পকারখানার প্রায় ৬২ শতাংশ নারায়ণগঞ্জ শহর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থিত। ওই এলাকায় নিট পল্লি স্থাপন করা হলে ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে আরও নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে।
বিকেএমইএসহ ব্যবসায়ীদের আটটি জাতীয়ভিত্তিক সংগঠন ও ৩৩টি স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ওই এলাকায় নিট পল্লি স্থাপনের জন্য নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সোনারগাঁয়ের আনন্দবাজার এলাকায় এসইজেড গঠিত হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা নতুন শিল্পকারখানা স্থাপন করে পণ্য পরিবহনে বিশেষ সুবিধা পাবেন। এখানে নৌ ও সড়কপথে পণ্য আনা-নেওয়া করা যাবে। ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে এশিয়ান হাইওয়ে ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে প্রকল্প এলাকাটির অবস্থান।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নারায়ণগঞ্জের দৃশ্যপট বদলে যাবে। আমাদের প্রস্তাব ইতিমধ্যে গ্রহণ করে সরকার প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করেছে।’
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু নাছের ভূঞা প্রথম আলোকে জানান, তিনটি প্রকল্পের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে ইতিমধ্যে জমির হালনাগাদ মালিকানা ম্যাপসহ অন্যান্য তথ্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
তবে এই তিনটি প্রকল্প কতটা বাস্তবসম্মত হবে, তা ভালোভাবে যাচাই করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। একাধিক ব্যবসায়ী বলছেন, অনেক বড় প্রকল্প হাতে নিতে গিয়ে নানা ধরনের জটিলতা ও সমস্যা দেখা দেয়। তাই ভালোভাবে সব দিক পর্যালোচনা করে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা গেলে তা হবে অধিক অর্থবহ।