যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকে সম্প্রসারণ করে এমন খাতেই এক্সিম শুধু অর্থায়ন করে
যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিতে চায়
![অ্যামচেমের ভোজসভায় এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান ফ্রেড হকবার্গ](https://images.prothomalo.com/prothomalo%2Fimport%2Fmedia%2F2016%2F02%2F04%2Fbb377aa9e5bdb2b48332c6005c56d470-15.jpg?auto=format%2Ccompress)
বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতকে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সফররত চেয়ারম্যান ও সভাপতি ফ্রেড পি হকবার্গ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নে আরও বিনিয়োগ দরকার। এক্সিম ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ঋণ নিতে পারে।
কীভাবে অর্থায়ন হতে পারে—এর উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চারটি দূরপাল্লার বোয়িং ৭৭৭৩০০ ইআর উড়োজাহাজ কেনার জন্য ২০১১ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ৫০ কোটি ডলারের বেশি অর্থায়ন করেছে। এগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিকাশের ফলে নিরাপদ, জ্বালানিসাশ্রয়ী স্বল্পমূল্যের উড়োজাহাজের প্রয়োজন মেটাবে। তবে তিনি এও মনে করিয়ে দেন যে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকে সম্প্রসারণ করে—এমন খাতেই এক্সিম ব্যাংক শুধু অর্থায়ন করে থাকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে ফ্রেড পি হকবার্গ এ কথা বলেন। রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে ‘বাংলাদেশের সম্ভাবনা: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিম ব্যাংক ও বাংলাদেশ কীভাবে অংশীদার হতে পারে?’ শীর্ষক এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অ্যামচেম সভাপতি নুরুল ইসলাম এতে সভাপতিত্ব করেন।
ফ্রেড হকবার্গ মনে করেন, বাংলাদেশে বেশ শক্তিশালী একটি বেসরকারি খাত রয়েছে। আর এক্সিম ব্যাংকের ওভারসিজ প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন (ওপিআইসি) তহবিল থেকে এ দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা বড় ঋণের জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।
ফ্রেড হকবার্গ শুরুতেই কেন বাংলাদেশে সফরে এসেছেন, এর ব্যাখ্যা দেন। ব্যাখ্যায় বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি এবং ভোক্তা চাহিদার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো এখানে প্রতিযোগিতা করতে চায়। তাই তিনি ২০১৬ সালের প্রথম আন্তর্জাতিক সফর হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেন। তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক বছর ধরেই এ দেশে ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আশা করি, ২০১৬ সালে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। তাই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাও অব্যাহত থাকবে।’
তিনি মনে করেন, অবকাঠামো উন্নয়ন ও ব্যবসায় পরিবেশ সহজ করতে পারলে প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে।
অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে বড় বাজার হয়ে উঠছে। এতে বাংলাদেশের উচ্চ প্রবৃদ্ধির সুযোগও তৈরি হচ্ছে। বাংলাদেশের এ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার অংশীদার হতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তাঁর মতে, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
নুরুল ইসলাম বলেন, যে খাতে কর্মসংস্থান হয়, এক্সিম ব্যাংক মূলত সেসব খাতে বিনিয়োগ করে। কয়েক বছর আগে ভিয়েতনামের উৎপাদন খাতে ১০০ কোটি ডলার অনুমোদন দেয় এক্সিম ব্যাংক। এর ফলে ওই খাতে বিপুল কর্মসংস্থান হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার ফ্রেড হকবার্গ দুদিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন। সফরকালে তিনি মন্ত্রী, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।