রাশিয়া অথবা পশ্চিমা মিত্র, একটিকে বেছে নিতে হবে

যুক্তরাষ্ট্রের উপ–অর্থমন্ত্রী (ডেপুটি ট্রেজারি সেক্রেটারি) ওয়ালি অ্যাডেইমো
ছবি: গেটি ইমেজেস

বিশ্বের বড় কোম্পানিগুলোকে ব্যবসার জন্য একটি পক্ষ বেছে নিতে হবে। ঠিক করতে হবে, তারা রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করবে, নাকি পশ্চিমা মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে ব্যবসা করবে। যুক্তরাষ্ট্রের উপ–অর্থমন্ত্রী (ডেপুটি ট্রেজারি সেক্রেটারি) ওয়ালি অ্যাডেইমো সম্প্রতি এসব কথা বলেছেন। খবর বিবিসির।

যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দিচ্ছেন শীর্ষ এই মার্কিন রাজনীতিক। নিষেধাজ্ঞার পরবর্তী পর্যায়ের সমন্বয় করতে বর্তমানে ইউরোপ সফর করছেন তিনি।

বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ইউক্রেনের মিত্ররা রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা দিতে চায়। এ পর্যায়ে বড় সংস্থাগুলো ব্যবসা চালু রেখে ইউক্রেনে আগ্রাসনের বিষয়ে রাশিয়াকে সাহায্য করে যেতে পারে। অথবা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ৩০টি দেশের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে। একই সঙ্গে সম্পদ জব্দের বিষয়ে রাশিয়ার অভিজাত ধনীদেরও (অলিগার্ক) সতর্ক করেন তিনি।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করে। এর প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের অনেক দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। একই সঙ্গে অনেক পশ্চিমা কোম্পানি সে দেশে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে বা রাশিয়া থেকে তাদের পরিষেবা প্রত্যাহার করে। আবার অনেকে নৈতিক কারণেও রাশিয়ার বাজার ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

তারপরও বেশ কিছু বড় কোম্পানি রাশিয়ায় কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। এর মধ্যে আছে মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার ও বার্গার কিংয়ের মতো বেশ কিছু সুপরিচিত ব্র্যান্ড। স্থানীয় ফ্র্যাঞ্চাইজির মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ায় তারা চাইলেও হুট করে রাশিয়া ছেড়ে যেতে পারছে না। কিন্তু ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞায় ব্যবসা নিয়ে অসুবিধায় পড়েছে তারা। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের উপ–অর্থমন্ত্রী রাশিয়া অথবা পশ্চিমা জোটের মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নেওয়ার কথা বললেন।

চীনা ও ভারতীয় কোম্পানিগুলো রাশিয়ায় পশ্চিমাদের শূন্যস্থান পূরণের চেষ্টা করছে—এমন খবর ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসেছে। এ প্রসঙ্গে ওয়ালি অ্যাডেইমো বলেন, নিষেধাজ্ঞা এড়াতে যে-ই রাশিয়াকে সাহায্য করবে, তাদের বিরুদ্ধেই যুক্তরাষ্ট্র ব্যবস্থা নেবে।

অ্যাডেইমো আরও বলেন, এটি স্পষ্ট যে মার্কিন ডলার, ইউরো ও পাউন্ড বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থার মেরুদণ্ড। যদি কেউ এই মুদ্রার মাধ্যমে লেনদেন করতে চায়, তাদের এসব নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে হবে।

বিবিসি জানিয়েছে, বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও প্রাথমিক মন্দা কাটিয়ে রুশ মুদ্রা রুবলের যে দরপতন হয়েছিল, তার সিংহভাগ পুনরুদ্ধার হয়েছে। এর কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা রাশিয়ার তেল আমদানি নিষিদ্ধ করলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো এখনো রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে পারেনি। তাই যুদ্ধের মধ্যেও রাশিয়ার সঙ্গে ইউরো ও পাউন্ডের লেনদেন অব্যাহত ছিল। এটাই রাশিয়ার মুদ্রাকে স্থিতিশীলতা দিয়েছে। যদিও যুক্তরাজ্য বলেছে, তারা চলতি বছরের শেষ নাগাদ রাশিয়া থেকে তেল কেনা পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে।