৩০% শেয়ার না থাকলে ভুগতে হবে কোম্পানিকে: বিএসইসির চেয়ারম্যান

বিএসইসির সর্বশেষ আগস্ট মাসের তথ্য অনুযায়ী শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৪১ কোম্পানির উদ্যোক্তা–পরিচালকদের হাতে সম্মিলিতভাবে নিজ নিজ কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই।

শেয়ারবাজারের যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে সম্মিলিতভাবে ওই কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকবে না, সেসব কোম্পানিকে ভুগতে (সাফার) হবে। সম্মিলিতভাবে ন্যূনতম শেয়ার ধারণে কোম্পানিগুলোকে সময় বেঁধে দিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সময় শেষ হলেই আইন অমান্যকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘোষণা দিয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম। তিনি বলেছেন, এরই মধ্যে ন্যূনতম ২ শতাংশ শেয়ার না থাকার কারণে ১৭ জন পরিচালকের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। এখন ৩০ শতাংশ শেয়ার যেসব কোম্পানির থাকবে না, তারাও পার পাবে না। তাদের ভুগতে (সাফার) হবে।

১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দেশের শেয়ারবাজারে যা ঘটেছে, তা দেশের নাগরিক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই হতাশার। তাই পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হলে বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা সবার আগে দরকার।
মোস্তাফিজুর রহমান, বিশেষ ফেলো, সিপিডি

বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে আজ সোমবার বিএসইসি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম এসব কথা বলেন। ‘বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান। আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবু আহমেদ ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এবং বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক হোসেন সামাদ।
মূল প্রবন্ধে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দেশের শেয়ারবাজারে যা ঘটেছে, তা দেশের নাগরিক ও বিনিয়োগকারীদের জন্য খুবই হতাশার। তাই পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হলে বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা সবার আগে দরকার। যত দিন পুঁজি তথা বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা নিশ্চিত হবে না, তত দিন কার্যকর পুঁজিবাজারও আমরা দেখতে পাব না।’

অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ তাঁর বক্তব্যে মেটলাইফ, নেসলে, ইউনিলিভারের মতো মানসম্মত কোম্পানি বাজারে আনতে উদ্যোগী হওয়ার জন্য বিএসইসি ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি এ-ও বলেন, শুধু মুখে বললে ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসবে না। এ জন্য কর ছাড়সহ নানা ধরনের সুবিধা দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মিজানুর রহমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা দেখেছি, গত ১০ বছরে যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজারে আসারই কথা না, সেসব কোম্পানি বাজারে এসেছে। অথচ যাদের আসার কথা, তারা আসেনি।

আমরা বিশ্বাস করি, যদি বাজারে ভালো পরিবেশ ও সুশাসন নিশ্চিত করা যায়, তবে ভালো কোম্পানি বাজারে আসতে উৎসাহিত হবে।
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম, চেয়ারম্যান,বিএসইসি

সভাপতির বক্তব্যে বিএসইসির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘বাজারে আমরা এ বার্তা দিতে চাই, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থই আমাদের কাছে সবার আগে। আমাদের নিজস্ব কোনো অ্যাজেন্ডা নেই, দেশের মানুষ ও বিনিয়োগকারীর স্বার্থই আমাদের অ্যাজেন্ডা।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাজারে ভালো কোম্পানি নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমরা বিশ্বাস করি, যদি বাজারে ভালো পরিবেশ ও সুশাসন নিশ্চিত করা যায়, তবে ভালো কোম্পানি বাজারে আসতে উৎসাহিত হবে।’
বিএসইসির সর্বশেষ আগস্ট মাসের তথ্য অনুযায়ী শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৪১ কোম্পানির উদ্যোক্তা–পরিচালকদের হাতে সম্মিলিতভাবে নিজ নিজ কোম্পানির ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই।