আবরার হোসেন

করোনার কারণে গত দুই বছরে যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ধাক্কা কাটিয়ে এখনো আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। যখনই কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নতুন কার্যাদেশ আসতে শুরু করেছিল, তখনই আবার ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এতে বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি, ডলার-সংকট ইত্যাদি কারণে কাঁচামাল, সরবরাহ ও আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিকে কার্যাদেশ বাড়লেও অন্যদিকে ব্যয় বেড়েছে অনেক। ফলে মুনাফা কমে গেছে।

এমন অবস্থায় বাজেটে রপ্তানিতে উৎসে কর দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত ঠিক হয়নি। এতে আমাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হবে। কারণ, আমরা যে প্রণোদনা পেয়েছিলাম, সেটা মূলত ঋণ। সেই টাকা আমাদের শোধ করতে হচ্ছে। আবার প্রতি মাসেই খরচ বাড়ছে। একটু এদিক-সেদিক হলেই বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় মূল্যস্ফীতির এই সময়ে শ্রমিকদের বেতনও বাড়ানো যাচ্ছে না। উৎসে কর বৃদ্ধি না করা হলে সেই অর্থে ঋণ শোধসহ বাড়তি খরচের বোঝা সামাল দেওয়া আমাদের জন্য সহজ হতো। এটা বর্তমান সময়ে বেশি জরুরি।

চীনে সাম্প্রতিক করোনা বিধিনিষেধের কারণে বৈশ্বিক ক্রেতারাও চীনের বিকল্প গন্তব্য খুঁজছেন। এমন প্রেক্ষাপটে বাজেটে কর অবকাশের মতো কিছু সুযোগ-সুবিধা দিলে বাংলাদেশ উপকৃত হতো। সহজে ব্যবসা বাড়ানো যেত। এই বিষয়গুলো ছাড়া প্রস্তাবিত বাজেটকে ব্যবসাবান্ধব ও ভারসাম্যপূর্ণ বাজেট বলে মনে হয়েছে।

বাজেটে আমদানি করা ফ্রিজ, ল্যাপটপ, মুঠোফোনসহ বিলাসপণ্যের ওপর কর আরোপকে ইতিবাচক বলব। কারণ, এতে স্থানীয় শিল্পের প্রসার ঘটবে। তবে ইন্টারনেট সেবায় বাড়তি কর আরোপ না করে এটাকে আরেকটু সহনশীল পর্যায়ে রাখা উচিত ছিল।