বাজেটে অনেক কিছুই স্পষ্ট নয়। আমাদের আবাসন খাত নিয়ে কোনো কথা নেই। বাজেটে নির্মাণসামগ্রী, বিশেষ করে রড ও সিমেন্টের কাঁচামাল আমদানির ওপর কর কমানো উচিত ছিল। সেটি তো হয়নি। উল্টো কর বাড়ানো হয়েছে। তাতে রডের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঢাকায় যাঁরা বাড়িঘর নির্মাণ করছেন, তাঁদের প্রতি টন রড ৮৮ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। কিন্তু ঢাকার বাইরে পরিবহন খরচের কারণে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যেমন যশোরে আমরা প্রতি টন রড প্রায় ১০ হাজার টাকা বেশি দাম দিয়ে কিনছি। এতে আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি করা লিফটের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে স্থানীয় লিফটশিল্পকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছেন অর্থমন্ত্রী। এতে পরোক্ষভাবে আবাসন খাতে ইতিবাচক প্রভাব হয়তো পড়বে। তবে সবাই তো আর দেশে উৎপাদিত লিফট কেনেন না। ফলে সার্বিকভাবে লিফটের দাম আরও বাড়বে।
বাজেট ঘোষণার পর পাচার হওয়া অর্থ ৭ শতাংশ কর দিয়ে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়া নিয়ে ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা হচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে পাচার করা অর্থ দেশে আনার সুযোগ দেওয়ার প্রতিবাদ করি। কারণ, এটা একটা দুর্নীতি। এই টাকা আসবে কি না, জানি না। যদি আসে, তাহলে ঢাকার বাইরে মফস্বলে বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাতে তা বিনিয়োগ করা উচিত।
আমরা দেখতে পাচ্ছি, গরিব মানুষ খেয়ে–পরে বাঁচতে পারছেন না। কারণ, নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। তবে এই জায়গায় সরকারের খুব বেশি কিছু করারও নেই। তবে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা তিন লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে চার লাখ টাকা করা উচিত ছিল। তাতে সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেত। এখন ঢাকায় একজন গাড়িচালকের বেতন গড়ে ২০ হাজার টাকা। আর ৭ হাজার টাকা বাড়তি বেতন পেলেই তাঁকে আয়কর দিতে হবে। এটা তো হতে পারে না।
সব মিলিয়ে প্রস্তাবিত বাজেট ব্যবসাবান্ধব হয়েছে। বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে ভালো আর কী দিতে পারত সরকার। বড় একটা বাজেট দিয়ে সরকার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে। এখন দেখা যাক, বাস্তবায়ন কতটুকু হয়।